তৃণমূল নেতাকে নিগ্রহের নালিশ সিপিএমের নামে

জঙ্গলমহলে সিপিএমের লোকজনের হাতে এক তৃণমূল নেতা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল। জামবনির এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েও পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ না করায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক-শিবির। কারণ, ছুতোনাতায় বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের চটজলদি পাকড়াও করার দৃশ্যই গত কয়েক বছরে বারবার দেখেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হওয়ায় শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০০:৪৭
Share:

জঙ্গলমহলে সিপিএমের লোকজনের হাতে এক তৃণমূল নেতা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল। জামবনির এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েও পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ না করায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক-শিবির। কারণ, ছুতোনাতায় বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের চটজলদি পাকড়াও করার দৃশ্যই গত কয়েক বছরে বারবার দেখেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এ ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হওয়ায় শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

Advertisement

সোমবার বিকেলে জামবনি থানায় ১১ জন স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হামলা ও মারধরের অভিযোগ করেন তৃণমূলের জামবনি ব্লক কার্যকরী সভাপতি সমীর ধল। সমীরবাবু তৃণমূল পরিচালিত জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। তাঁর অভিযোগ, গিধনি থেকে ঝাড়গ্রামে ফেরার পথে জামবনিচকে তাঁর গাড়ির উপর চড়াও হয় সিপিএম নেতা-কর্মীরা। তাঁকে ও তাঁর এক দেহরক্ষীকে নিগ্রহ করা হয়। সমীরবাবুর কাছ থেকে পঞ্চায়েত সমিতির গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোমবারই জামবনি থানায় সিপিএমের জামবনি জোনাল সম্পাদক হেনা শতপথী, জামবনি জোনাল সদস্য সাধন দণ্ডপাট, জামবনি লোকাল কমিটির সম্পাদক মানিক শতপথী, জামবনি ব্লক কৃষকসভার সম্পাদক হরিশ মাহাতো, ডিওয়াইএফের জামবনি ব্লক সভাপতি তাপস মল্লিক-সহ ১১ জনের নামে হামলা-মারধরের অভিযোগ করেন সমীরবাবু।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার ঝাড়গ্রামে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সভায় যাওয়ার জন্য জামবনিচকে সিপিএমের লোকাল কমিটির কার্যালয়ের সামনে বেশ কিছু বাস-লরি-ট্রেকার দাঁড়িয়েছিল। সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও সেখানে ছিলেন। আড়াইটে নাগাদ সমীরবাবুর গাড়ি সেখানে এলে কিছুক্ষণ যানজটে আটকে যায়। তাতে উত্তেজনাও ছড়ায়। সিপিএমের জামবনি জোনাল সম্পাদক হেনাদেবী বলেন, “সাজানো মামলায় আমাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছেন সমীরবাবু। হামলার কোনও ঘটনাই ঘটেনি।”

Advertisement

এর আগে তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে বিরোধী দলের একাধিক নেতা-কর্মীদের নানা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকী রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাতেও বিরোধী নেতাদের ধরা হয়েছে। তাহলে জামবনির ক্ষেত্রে অভিযোগ পেয়েও কেন হাত গুটিয়ে রয়েছে পুলিশ? কেন মামলা রুজু করা হয়নি? ফোন ধরেননি ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ভারপ্রাপ্ত সুপার ভারতী ঘোষ। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও। আর ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার আধিকারিকরা ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে’র বাইরে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে পুলিশেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, জামবনি থানা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে জামবনিচকে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন সমীরবাবু। ফলে, ঘটনাটি পুলিশের পক্ষে অস্বস্তিকর। তাছাড়া, কয়েক মাস ধরে জামবনির চিল্কিগড়ে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে প্রায়ই গোলমাল হচ্ছে। সম্প্রতি চিল্কিগড়ে সিপিএমের কৃষকসভার একটি কার্যালয় সমীরবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকেরা দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম। এই আবহে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করতে রাজি নয় পুলিশ। এক পুলিশ কর্মীর কথায়, “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব সময় সতর্ক ভাবে পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।” পুলিশ পদক্ষেপ না করায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন সমীরবাবু। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “আমি জামবনি থানায় বিস্তারিত অভিযোগ জানিয়েছি। ১১ জন অভিযুক্তের নামও দিয়েছি। এরপর পুলিশের কাজ পুলিশ করবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement