ঘাটাল শহরে মিছিল তৃণমূলের। —নিজস্ব চিত্র।
মহকুমার পাঁচটি পুরসভায় মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিল তৃণমূল। ক্ষীরপাই পুরসভার একটি আসন বাদে সব আসনেই এ দিন শাসক দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সকাল থেকেই প্রার্থী এবং দলীয় কর্মীরা গাড়িতে চেপে ঘাটালের ব্লক অফিসে জড়ো হন। পরে বিধায়ক শঙ্কর দোলই, দলের নেতা শ্যাম পাত্রের নেতৃত্বে মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে যান প্রার্থীরা। ছিলেন ঘাটাল শহরে দলের প্রার্থী তথা ঘাটাল কলেজের টিচার ইন-চার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায়ও। এ দিন ঘাটালে এসেছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ও। দীনেনবাবু এ দিনও দলের সব স্তরের নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন। কোন্দল ভুলে প্রচারের বার্তা দেন। পরে তিনি বলেন, “আমি এখন প্রায়ই আসব। সব স্তরের কর্মী-নেতাদের নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডেও যাব।”
এ দিন তৃণমূল ছাড়াও বিজেপি এবং একাধিক নির্দল প্রার্থী মনোনয় জমা দিয়েছেন। ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন দলের শতাধিক মনোনয়ন জমা পড়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার রাজনবীর সিংহ কপূর বলেন, “আজ, বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। গোটা প্রক্রিয়া সুষ্ঠ ভাবেই হচ্ছে।” কড়া পুলিশি পাহারার ব্যবস্থাও রয়েছে। বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
ঘাটাল, খড়ার, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই এবং রামজীবনপুর এই পাঁচটি পুরসভার ৬০ আসনের ৫৯টি আসনে এ দিন মনোনয়ন জমা দিয়েছে তৃণমূল। শুধু ক্ষীরপাই পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম ভট্টাচার্য এ দিন মনোনয়ন জমা দেননি। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে গৌতমবাবু চন্দ্রকোনা ১ ব্লকে তৃণমূলের সংগঠন ধরে রেখেছেন। তাঁর সঙ্গে কোন্দল রয়েছে আর এক নেতা সুজয় পাত্রের। জানা গিয়েছে, প্রার্থী বাছাইয়ের সময় গৌতমবাবুর মত গুরুত্ব না পাওয়ায় এবং তাঁর কোনও অনুগামীকে প্রার্থী না করায় ভোটে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গৌতমবাবু। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি চিত্ত পাল ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গৌতমবাবু এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্করবাবু বলেন, “আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি। জেলা সভাপতিও কথা বলেছেন। আশা করছি আজ,বুধবার গৌতমবাবু মনোনয়ন জমা দেবেন। ওঁর ক্ষোভ দল গুরুত্ব দিয়ে ভাববে।” ক্ষীরপাই পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী চম্পা বাগ দলেরই একটি গোষ্ঠীর চাপে প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওই ওয়ার্ডে নতুন প্রার্থী হয়েছেন তনুশ্রী মণ্ডল।
প্রার্থী হতে না পারায় ক্ষুব্ধ চন্দ্রকোনার বিদায়ী পুরপ্রধান রাম কামিল্যাও। তাঁর অভিযোগ, “চন্দ্রকোনায় এ বার টাকা নিয়ে প্রার্থী ঠিক হয়েছে।” পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল রাম কামিল্যা এবং উপ-পুরপ্রধান রণজিত্ ভাণ্ডারীর বিরুদ্ধে। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রামবাবুকে প্রার্থী করা হয়নি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু বলেন, “দলীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।”