তৃণমূলের কর্মসূচিতে জমায়েত।
নতুন গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে রয়েছে জেলা আদালত। তাই ওই এলাকায় বড় জমায়েত এড়াতে জেলা বিচারকের কাছে আদালত বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন তমলুকের পুরপ্রশাসক। কিন্তু পুরপ্রশাসককেই দেখা যাচ্ছে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার পাশেই বিশাল জমায়েতে হাজির হয়ে বক্তৃতা করতে!
এই বিষয়ে বিজেপি’র তমলুক নগর মণ্ডল কমিটির তরফে শনিবার তমলুকের এসডিপিও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তমলুকের হাসপাতাল মোড়ে শুক্রবার তৃণমূল সমবায় সেলের তরফে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা ওই কর্মসূচিতে কয়েকশো কর্মী-সমর্থকের পাশাপাশি ছিলেন সমবায় সেলের জেলা সভাপতি গোপাল মাইতি, তমলুকের পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন। ওই সভাতেই সামাজিক দূরত্ব বিধি ভাঙার অভিযোগ করেছে বিজেপি।
বিজেপি’র তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, হাসপাতাল মোড়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে যেখানে তৃণমূলের সভা করা হয়েছে, সেটি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার (১৫ নম্বর ওয়ার্ডের) ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিজেপি’র তমলুক নগর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বেরা বলেন, ‘‘তমলুক শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডকে গণ্ডিবদ্ধ হিসাবে ঘোষণা করে বাজার, অফিস, আদালত বন্ধ করা হচ্ছে। আমজনতা তাতে সাড়া দিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের লোকজন সেটা বুঝছে না। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার পাশেই এত বড় জমায়েত করে সামাজিক দূরত্ব বিধির নিয়ম মানছেন না। এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছি।’’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরসভার ৭, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সম্পূর্ণ আংশ এবং ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক এলাকাকে নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত করে লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে তমলুক শহরের ব্যস্ততম বড় বাজার এবং মহাপ্রভু বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ করা হয়েছে। পুরসভার আবেদনের ভিত্তিতে বন্ধ হয়েছে মহাপ্রভু বাজারের সংলগ্ন জেলা আদালতের কাজও।
এর মধ্যে পুরপ্রশাসকের এ হেন কাজকে কাণ্ডজ্ঞানহীনতা বলে অভিযোগ করছে বিজেপি। তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে তারা। বিজেপি নেতা সুরজিতের অভিযোগ, ‘‘লোকজনের জমায়েত বন্ধ করতে পুরসভার প্রশাসক বিজ্ঞপ্তি জারি করছেন। অথচ সতর্কতা বিধি ভেঙে কয়েকশো দলীয় সমর্থক নিয়ে তৃণমূলের সভা করা হচ্ছে। আর সেই সভায় খোদ পুরপ্রশাসক বক্তৃতা করেছেন। এতে বাসিন্দাদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।’’ যদিও বিজেপি’র অভিযোগ উড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘সভার ওই জায়গাটি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে পড়ে না। আর সভায় সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই দলীয় সমর্থকরা বসেছিলেন। বিরোধী হিসাবে বিজেপি অভিযোগ করতেই পারে।’’