International Day of Disabled Persons

এক হাতে পরিষেবা, ভরসার কর্মী বাপ্পা

পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা গ্রামে জন্ম অরিজিতের। ডাক নাম বাপ্পা। সেই নামেই তাঁর পরিচিতি। কনুই থেকে বা’হাত নেই এই বাপ্পার।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৪
Share:

ব্যাঙ্কে ব্যস্ত বাপ্পা। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্ব প্রতিবন্ধতা দিবস আজ, রবিবার। দিনটার অবশ্য আলাদা গুরুত্ব নেই অরিজিৎ আদকের কাছে। পাঁশকুড়ার এই বাসিন্দার জন্মের সময় থেকেই একটি হাত নেই। তবে জীবন থেমে থাকেনি তাঁর। এক হাতেই উচ্চ শিক্ষা লাভ করে এখন করছেন ব্যাঙ্কে করণিকের চাকরি। এবার বিশ্ব প্রতিবন্ধকতা দিবস অরিজতের কাটবে আর পাঁচটা সপ্তাহের ছুটির দিন— রবিবারের মতোই।

Advertisement

পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা গ্রামে জন্ম অরিজিতের। ডাক নাম বাপ্পা। সেই নামেই তাঁর পরিচিতি। কনুই থেকে বা’হাত নেই এই বাপ্পার। কিন্তু এক হাত নিয়েই তিনি যা কাজ করেন, তাতে খুশি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে গ্রাহকেরা।

বাপ্পা শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাস করে ভর্তি হন পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে। ২০১২ সালে স্নাতক পাস করেন। বাবা ও দাদা কৃষিজীবী। এই পরিবারের প্রতিবন্ধী ছোট ছেলের জন্য বাবা-মায়ের চিন্তার শেষ ছিল না। তবে নিজের চেষ্টায় প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে সবার দুশ্চিন্তা দূর করেছেন বাপ্পা। সরকারি চাকরি জোটেনি। তবে স্নাতক পাস করার পর শ্যামসুন্দরপুর পাটনায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সাধারণ কর্মচারী হিসেবে তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন। সকাল সাড়ে ৯ টায় বাপ্পা ব্যাঙ্কে পৌঁছে যান। অফিসের চাবি খোলার পর ভিতরে এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে ফাইল পৌঁছে দেওয়া, গ্রাহকদের ফর্ম পূরণে সহযোগিতা করা, ভিড় সামাল দেওয়া এক হাতেই সারেন বাপ্পা। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে এলাকার প্রতি জায়গা তিনি চেনেন।

Advertisement

বাবা, মা, স্ত্রী, এক মেয়ে নিয়ে মোট ১০ জনের সংসার বাপ্পাদের। তবে সংসারে তিনি কারও বোঝা হয়ে নেই। ব্যাঙ্কে কাজ করে মাসে মেলে পাঁচ হাজার টাকা। অতিরিক্ত কাজের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে আরও অতিরিক্ত কিছু টাকা দেন। তা দিয়েই ব্যাঙ্ক এবং সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব নিখুঁত ভাবে সেরে এলাকায় যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন বাপ্পা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement