শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। —নিজস্ব চিত্র।
দিনটা ছিল ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১০। শিলদা ইফআর ক্যাম্পে মাওবাদীদের কালাসনিকভের শব্দ আর আর্ত চিৎকার থেমে যাওয়ার পর সেদিন সার দিয়ে পড়ে ছিল ২৪ জন জওয়ানের নিথর দেহ শিলদা নিমতলা সংলগ্ন ক্যাম্পে। বাতাস ভারী হয়েছিল রক্ত আর বারুদের পোড়া গন্ধে। সাত বছর পর একই দিনে শিলদার নতুন ইএফআর ক্যাম্পে শহিদদের স্মৃতিতে লাগানো ২৪টা মেহগনি গাছ তরতর করে বেড়ে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে।
সাত বছর পর সেই শিলদা শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে আইজি রাজীব কুমার মিশ্র বললেন, ‘‘বর্তমান সরকারের আমলে বেশ কয়েকজন মাওবাদী নেতা আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরেছেন। এখন জঙ্গলমহলে আর মাওবাদী নেই। যা আছে তা পাশের রাজ্যে। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে আর না ওরা এ দিকে এসে গোলমাল করতে পারে।’’ এখানেই না থেমে তাঁর সংযোজন, ‘‘যে সব মাওবাদী এখনও আত্মসমর্পণ করেননি তাঁদের কাছে আনুরোধ, আপনারাও সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসুন। সরকার ও আমরা আপনাদের পাশে আছি।’’
বুধবার সকালে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে পালন করা হল শিলদা শহিদ দিবস। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) রাজীব কুমার মিশ্র, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্য, ডিআইজি সিআরপিএফ অনিলকুমার চতুর্বেদী, পুলিশ সুপার ভারাতী ঘোষ-সহ জেলা পুলিশ আধিকারিকরা। ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রাসাদ মিনা ও মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো। শিলদা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে এ দিন সকালে মূল অনুষ্ঠানের শুরুতে অস্থায়ী শহিদ বেদিতে মাল্যদান করা হয়। এরপর প্যারেডের মধ্য দিয়ে শহিদদের স্মরণ করা হয়। পরে শহিদদের নামে লাগানো ২৪টি গাছে জল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ দিন ক্যাম্প চত্বরে জেলা পুলিশ ও সিআরপএফের ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের মধ্যে পুলিশ স্মৃতি ভলিবল খেলার আয়োজন করা হয়। জেলা পুলিশ এই খেলায় জেতে। পরে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়।