অবহেলা: যত্রতত্র পড়ে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র
শহরের অধিকাংশ স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি পড়ে গিয়েছে। আর সেই ছুটিতে দেদার ভিড় জমছে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায়। প্রতিদিন গড়ে তিন-চার হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে বলে খবর চিড়িয়াখানা সূত্রেই। আর ছুটির দিনে টিকিট বিক্রির হার গড়ে প্রায় সাত হাজার টাকা। অথচ এক বছর গড়িয়ে গেলেও এখনও চিড়িয়াখানার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়নি।
চিড়িয়াখানার যত্রতত্র পড়ে রয়েছে গুটিপাথর আর বালি। অভিযোগ, ঠিকাদারদের গড়িমসি আর উপযুক্ত নজরদারির অভাবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পটির এই এমন হাল। টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দর্শকদের। মিনি জু থেকে পুরোদস্তুর জুলজিক্যাল পার্কে উন্নীত হলেও এখানে প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ হয়নি। ফলে, দর্শকদের ভিড় বাড়লে চিড়িয়াখানায় নজরদারির মতো কর্মীই নেই।
২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানাটির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে ২৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে জুলজিক্যাল পার্কে পরিবর্তিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিড়িয়াখানাটির ‘জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক’ এই নামকরণ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে জঙ্গলমহলের এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ওই সময় থেকেই মিনি চিড়িয়াখানাটি পূর্ণাঙ্গ চিড়িয়াখানায় উন্নীত হয়। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ এবং ওয়েস্টবেঙ্গল জু-অথরিটির বরাদ্দ টাকায় মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী চিড়িয়াখানার সম্প্রসারণ শুরু হয়।
চিড়িয়াখানার নতুন প্রবেশ পথ ও নতুন টিকিট ঘর চালু হয়নি এখনও। এখনও চিড়িয়াখানায় স্থায়ী অধিকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। ঝাড়গ্রামের ডিএফও অধিকর্তার বাড়তি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। চিড়িয়াখানায় নিজস্ব প্রাণিচিকিৎসক নেই। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের ধবনী বিটের তিন জন কর্মী চিড়িয়াখানার বাড়তি দায়িত্ব সামলান। মিনি চিড়িয়াখানায় আগে বনবিড়াল, বাঘরোল, হনুমান ও বাঁদরের মতো কয়েকটি প্রাণী খাঁচায় ছিল। সেগুলিকে মুক্ত পরিবেশে এনক্লোজারে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই কাজও এগোয়নি।
চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা জাহানারা বিবি, সদাই দাস, সুদেব বেরাদের বক্তব্য, “এত সুন্দর চিড়িয়াখানায় কত রকমের পশু-পাখি ও সরীসৃপ রয়েছে। কিন্তু চিড়িয়াখানা চত্বরটা অগোছালো। বয়স্কদের জন্য দুষণহীন যানে ঘুরে দেখার ব্যবস্থাও নেই।” রাজ্যের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল তথা ওয়েস্ট বেঙ্গল জু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি বিনোদকুমার যাদবের অবশ্য দাবি, “পুজোর মধ্যে চিড়িয়াখানার সিংহভাগ পরিকাঠামো উন্নয়ন হয়ে যাবে। লেপর্ডের এনক্লোজার তৈরির কাজও হয়ে গিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায়
লেপার্ড আসবে।”