খড়্গপুর নামেই ‘এ-ওয়ান’

পুরো স্টেশনে একটিই মাত্র ডিসপ্লে বোর্ড

পুজো শেষে স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় কর্মস্থলে ফিরছিলেন অর্ক চট্টোপাধ্যায়। খড়্গপুর স্টেশন থেকে ৭টা ১৫মিনিটে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল তাঁর। মালগুদাম সংলগ্ন টিগেটে কোনও ডিসপ্লে বোর্ড না থাকায় কখন ট্রেন আসছে জানতে তিনি বোগদা সংলগ্ন সাবওয়ের কাছে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share:

সবেধন: বোগদায় এই একটি ডিসপ্লে বোর্ডই ভরসা। নিজস্ব চিত্র

নামেই ‘এ ওয়ান’। পুরো খড়্গপুর স্টেশনে রয়েছে একটিই মাত্র ট্রেনের সময় সারণীর ডিসপ্লে বোর্ড। স্টেশনের উত্তরদিকে বোগদায় সাবওয়েতে ঢোকার মুখে অনেক উঁচুতে লাগানো সেই ডিসপ্লে বোর্ডও দেখতে হয় কষ্ট করে। আর দক্ষিণ দিকে মালগুদাম সংলগ্ন প্রবেশপথ দিয়ে যাঁরা স্টেশনে ঢোকেন তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ। ফুটওভারব্রিজের উপর দিয়ে ১২টি প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে বোগদায় এলে তবেই দেখা মেলে বোর্ডের। তাই কোন ট্রেন কখন আসবে, তা জানতে তাঁদের ভরসা মাইকের ঘোষণা।

Advertisement

পুজো শেষে স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় কর্মস্থলে ফিরছিলেন অর্ক চট্টোপাধ্যায়। খড়্গপুর স্টেশন থেকে ৭টা ১৫মিনিটে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল তাঁর। মালগুদাম সংলগ্ন টিগেটে কোনও ডিসপ্লে বোর্ড না থাকায় কখন ট্রেন আসছে জানতে তিনি বোগদা সংলগ্ন সাবওয়ের কাছে যান। হঠাৎ দেখেন, ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকে গিয়েছে।

তড়িঘড়ি স্ত্রীকে নিয়ে প্রায় দৌড়ে ট্রেনে ওঠেন তিনি। অর্ক বলছিলেন, ‘‘এত বড় স্টেশনে কোন প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসছে তা দেখার জন্য সাবওয়ের কাছে একটিই মাত্র ডিসপ্লে বোর্ড। প্রবীণ ব্যক্তিরা কী ভাবে দৌড়ে ট্রেনে উঠবেন। রেলের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।” শুধু অর্ক নন, প্রতিদিনই বহু যাত্রী এ ভাবেই দুর্ভোগের শিকার হন।

Advertisement

খড়্গপুর স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। দৈনিক গড়ে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। আগে বোগদায় স্টেশনের সাবওয়েতে নামার মুখে বড় একটি ডিসপ্লে বোর্ড ছিল। এ ছাড়াও প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে নামার মুখে ফুটব্রিজে ছিল ছোট ডিসপ্লে বোর্ড। যদিও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিকল হয়ে গিয়েছে একের পর এক
ডিসপ্লে বোর্ড।

তবে মালগুদাম সংলগ্ন এলাকায় কোনও ডিসপ্লে বোর্ডই নেই। বছর খানেক আগে বোগদায় সাবওয়ে ঢোকার মুখে অনেক উঁচুতে একটি ডিসপ্লে বোর্ড লাগানো হয়। যদিও সেই বোর্ডের লেখা স্পষ্ট নয়। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে যাত্রীদের।

খড়্গপুরের কৌশল্যার বাসিন্দা জয়ন্ত জোয়ারদার বলেন, “এতবড় স্টেশনে সব জায়গায় ডিসপ্লে বোর্ড না থাকায় কোন প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসছে তা বুঝতে যে কী অসুবিধা হয় বলে বোঝানো যাবে না। কোনও যাত্রী যদি ফুটওভারব্রিজের উপরে থাকেন, তবে তিনি জানতেও পারবেন না কখন ট্রেন আসবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বোগদায় যে বোর্ড লাগানো হয়েছে তা এত উঁচুতে যে দেখতে অসুবিধা হয়। রেলের এ বিষয়ে ভাবা উচিত।” বেনাপুরের বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক জ্যোতিন্দ্রনাথ দাস বলছিলেন, “ডিসপ্লে বোর্ড না থাকায় যে যাত্রীরা যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তা জেনেও রেল উদাসীন।”

খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “স্টেশনে যে ডিসপ্লে বোর্ডগুলি বিকল হয়ে গিয়েছে, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। মালগুদামের দিকে একটি ডিসপ্লে বোর্ড থাকা জরুরি।’’

তাঁর কথায়, ‘‘ইতিমধ্যেই চারটি ডিসপ্লে বোর্ডের জন্য রেলবোর্ডে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই অনুমোদন হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement