‘সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরাম’- এর কমিটি তৈরি হল মেদিনীপুরেও। আগামী ২৮ জুন কমিটির উদ্যোগে মেদিনীপুর শহরে এক কনভেনশন হবে। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্য, রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য ভারতী মুত্সুদ্দি প্রমুখের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের এবিটিএ হলে এক বৈঠকে ওই কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক হয়েছেন মেদিনীপুর কলেজের টিচার ইন-চার্জ সুধীন্দ্রনাথ বাগ, সভাপতি প্রাবন্ধিক আজহারউদ্দিন খান। বৈঠকের পর কমিটির আহ্বায়ক সুধীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘যেখানে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে, সেখানেই মানুষের পাশে দাঁড়াবে ফোরাম।’’ রাজ্যে একের পর এক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর গত নভেম্বরে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরাম’ গঠন হয়। নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। ফোরামে কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যেমন রয়েছেন, তেমনই বিশিষ্টজনেরাও রয়েছেন। নভেম্বরে কলকাতায় মিছিল করে এই সংগঠন। সেই শুরু। তারপর বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে নামতে দেখা গিয়েছে ফোরামের সদস্যদের। নেতৃত্বে সুনন্দ সান্যাল, সুজন চক্রবর্তী, আব্দুল মান্নানরা। বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বীরভূম-সহ কিছু জেলাতেও ছুটে গিয়েছেন ফোরামের সদস্যরা। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহরেও ফোরামের কমিটি গঠন হল।
কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা চাই রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক। সন্ত্রাস নয়, আমরা শান্তির পক্ষে।’’ তাঁর দাবি, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মেদিনীপুরও তার ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেহাল হয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত যদি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে তাকে ধরার চেষ্টাই করছে না পুলিশ। দুস্কৃতীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গণতন্ত্র শুধু বিপন্ন নয়, বিপর্যস্ত। যেন জঙ্গলের রাজত্ব চলছে।” কমিটির ওই সদস্যের মতে, ‘‘রাজ্যের স্বার্থে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে, শিল্পের স্বার্থে, বেকারদের স্বার্থে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন দরকার। একদা যাঁরা পরিবর্তনের হয়ে সওয়াল করেছিলেন, এটা তাঁরাও এখন বুঝতে পারছেন। প্রত্যেক মানুষকেই চিন্তাভাবনা করতে হবে কোনও পথে গেলে রাজ্য এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে পারে।’’
মেদিনীপুরে ফোরামের কমিটি গঠনকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের মন্তব্য, ‘‘ সিপিএমের কাছ থেকে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শিখতে হবে না কি! ৩৪ বছরের কথা মানুষ ভুলে যাবে! রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলেই এখন যে কেউ যে কোনও কর্মসূচি
করতে পারেন!”
সাহায্যের হাত। বজ্রপাতে মৃতদের বাড়িতে গেল তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল। ছিলেন দলের অন্যতম দুই জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ এবং আশিস চক্রবর্তী। শাসক দলের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গড়বেতার খড়কুশমার মাথুড়ি এলাকায় বজ্রপাতে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়। মারা যান সখের আলি মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী হালিমা বিবি এবং মেয়ে সোনামণি মণ্ডল।