প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারও সাফল্যের একাধিক নজির তৈরি করল পূর্ব মেদিনীপুরের ছাত্রছাত্রীরা। গত বার পাশের হারে রাজ্য সেরা ছিল পূর্ব মেদিনীপুর। পাশের হার ছিল ৯৪.১৯ শতাংশ।
করোনা পরিস্থিতির জেরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনটি বিষযের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ফল প্রকাশের সময় ৯০ শতাংশের বেশি ছাত্রছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে যে ১০টি জেলায় তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এবার সর্বোচ্চ ৪৯৯ নম্বর উঠেছে। তবে মেধা তালিকা প্রকাশ না হলেও পড়ুয়াদের নম্বর পাওয়ার নিরিখে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী প্রথম সারিতে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এঁদের মধ্যে ৪৯৭ নম্বর পেয়েছেন জেলার ভগবানপুর-১ ব্লকের কাজলাগড় এমএসবিসিএম হাইস্কুলের ছাত্রী সায়নী মহাপাত্র। জেলার মধ্যেও সম্ভাব্য প্রথম। ৪৯৬ নম্বর পেয়েছেন জেলার পাঁচজন ছাত্রছাত্রী। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশনের দেবাঞ্জন জানা, ময়নার দেউলি আদর্শ বিদ্যাপীঠের সুস্মিতা জালুয়া, তমলুক রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী গার্লস হাইস্কুলের শারমিন আখতার খান, ময়নার দক্ষিণ ময়না হাইস্কুলের অনুপম পাঁজা ও ভাগবানপুর-২ ব্লকের বাজকুল বলাইচন্দ্র বিদ্যাপীঠের
অভিনব পাহাড়ি।
৪৯৫ নম্বর পেয়েছেন জেলার চারজন ছাত্রছাত্রী। কন্টাই হিন্দু গার্লস স্কুলের সুচরিতা চরণ, কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশন উদয়শঙ্কর রথ, কাঁথি ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবনের শাশ্বত জানা ও কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষা সদনের সায়ন কুমার মাইতি। ফলের নিরিখে রাজ্যে প্রথম সারিতে থাকা জেলার এই সব ছাত্রছাত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকামহল ও অভিভাবকরা। নন্দকুমারের রাজনগর হাইস্কুলের শিক্ষক তথা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি অনুপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও জেলার ছাত্রছাত্রীরা খুবই ভাল ফল করেছে। আশাকরি ভবিষ্যতেও ওরা
কৃতিত্ব দেখাবে।’’
৪৯৬ নম্বর পাওয়া শারমিন আখতার খানের বাবা আইনাল আলি খান বলেন, ‘‘মেয়ের রেজাল্ট ভাল হবে আশা করেছিলাম। তবে এতটা ভাল হবে আশা করিনি। শারমিনের মতো আমাদের জেলার অন্য ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় ভাল ফল করায় খুব খুশি হয়েছি।’’ ৪৯৬ নম্বর পাওয়া দক্ষিণ ময়না হাইস্কুলের ছাত্র অনুপম পাঁজার কথায়, ‘‘আমার প্রিয় বিষয় পদার্থবিজ্ঞন ও রসায়ন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ওই দুটি বিষয়েই পরীক্ষা দিতে পারিনি। তাই বেশ মন খারাপ ছিল। তবে পরীক্ষার ফল ভাল হওয়ায় সেই আক্ষেপ কিছুটা দূর হল।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময় কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ফল খুব ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন। আমাদের জেলার পরীক্ষার্থীদের সামগ্রিক ফল খুব ভাল। এজন্য পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের
ধন্যবাদ জানাই।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম সারিতে থাকা ১০০ জন কৃতী ছাত্রছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে এদিন পুষ্পস্তবক, মিষ্টি ও মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া শংসাপত্র তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জানান বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। জেলার ১৩ জন ছাত্রছাত্রীকে এদিন সংবর্ধনা জানানো হয়।