ফুটবল খেলায় মত্ত রামলাল। নিজস্ব চিত্র।
এ কোন রামলাল! একেবারে অন্য ভূমিকায় ধরা দিল জঙ্গলমহলের ‘ত্রাস’ হয়ে ওঠা গজরাজ। আর দাপাদাপি বা হামলা নয়, গুদাম ভেঙে খাবার লুট করাও নয়, একেবারে অন্য মেজাজে ধরা দিল রামলাল। এ বারও অল্পবিস্তর দাপাদাপি করেছে সে, তবে সে দাপাদাপি ছিল কচিকাঁচাদের খেলার মাঠে। সেই মাঠেই ফুটবল নিয়ে কখনও শূন্যে ছুড়ে দিয়েছে, কখনও বল নিয়ে গড়াগড়ি খেয়েছে, কখনও আবার বলে লাথিও মেরেছে।
‘ফুটবলার’ রামলালের কীর্তি দেখে আতঙ্কের মধ্যেও যেন একটা আনন্দের রেশ ধরা পড়েছিল স্থানীয়দের মধ্যে। বিশেষ করে কচিকাঁচাদের মধ্যে। পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়ার ধড়রাশোল পাড়ার একটি মাঠে এলাকার বেশ কিছু ছেলে ফুটবল খেলছিল। তখনই তারা দেখে একটি হাতি এগিয়ে আসছে। সে আর কেউ নয়, লোকালয়ে দাপিয়ে বেড়ানো সেই রামলাল। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খেলা ফেলে মাঠ থেকে বেশ খানিকটা দূরে পালিয়ে যায় কচিকাঁচারা। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়ে মাঠে পড়ে থাকা ওই ফুটবলের দিকে এগিয়ে যায় রামলাল। ধীরস্থির ভাবে দুলকি চালে এগিয়ে গিয়ে ফুটবলটিকে শুঁড়ে তুলে নেয়। তার পর মাঠের পাশের রাস্তায় উঠে আসে। সেই ফুটবলটিকে নিয়ে কখনও শূন্যে ছুড়ে দিচ্ছিল, কখনও লাথি মারছিল, কখনও আবার বলটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে তাকে।
রামলালকে প্রথমে দেখে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, ‘ফুটবলার’ রামলালকে দেখে সেই ভয় কিছুটা ফিকে হয়। তার এই কাণ্ড দেখে স্থানীয়রা বেশ হতবাকই হয়েছেন। কারণ যে দাপুটে হাতিকে দেখেছেন তাঁরা, সেই রামলালকেই এ বার একেবারে হালকা মেজাজে দেখলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, রামলাল কাউকে কোনও ক্ষতি করেনি। এলাকারও কোনও ক্ষতি করেনি সে।
কখনও গৃহস্থের বাড়ির উঠোন, আবার কখনও পানীয় জলের কলের সামনে শুঁড়ে জল খাওয়া বা জাতীয় সড়কের উপর ট্রাক থামিয়ে চাল খাওয়ার দৃশ্য— জঙ্গলমহল এলাকায় রামলাল অতি পরিচিত। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শালবনির পিড়াকাটা এলাকায় একটি সরকারি গোডাউনে হানা দিয়েছিল রামলাল। শাটার ভেঙে চাল খেয়ে চলে গিয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়া রেঞ্জের লসিভাঙায় ফুড কর্পোরেশনের (এফসিআই) গুদাম ভেঙে ঢুকে মজুত চাল খেয়ে আবার রামলাল ফিরে যায় জঙ্গলে।