Telegu

মিলল ভাষাগত সংখ্যালঘুর স্বীকৃতি, খুশি তেলুগু সমাজ

সেখানে তেলুগুদের ভাষাগত সংখ্যালঘু হিসাবে স্বীকৃতির দাবিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৫৮
Share:

তেলুগু সমাজের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদীপ সরকারকে। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে তেলুগুদের বসবাস শুরু হয়েছিল একশো বছরেরও আগে। রেলশহর খড়্গপুরে এখন তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও রাজ্যে সংখ্যালঘু। এ বার দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে রাজ্যে ভাষাগত সংখ্যালঘুর স্বীকৃতিও পেল তাঁরা।

Advertisement

মঙ্গলবার ছিল রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠক। সেখানে তেলুগুদের ভাষাগত সংখ্যালঘু হিসাবে স্বীকৃতির দাবিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার। গত ২০১১ সাল থেকেই এই দাবি পূরণে লড়াই চালাচ্ছিলেন রাজ্যের তেলুগু সমাজ। স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরেও বারবার আবেদন জানিয়েছিল রেলশহরের অন্ধ্র ইয়ং মেন অ্যাসোসিয়েশন। তবে সুফল মেলেনি। গত বিধানসভা উপ-নির্বাচনে রেলশহরে তৃণমূল জয়ী হওয়ায় নতুন করে নিজেদের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তেলুগুরা। তাঁদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তেলুগু সমাজের বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন বিধায়ক প্রদীপ সরকার। সেখানে আশ্বাসও দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তবে বছর ঘুরলেও দাবি পূরণ হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে পরেই মিটে গেল সেই দাবি।

গত ৭ ডিসেম্বর জেলায় মুখ্যমন্ত্রী আসায় বিষয়টি ফের তুলে ধরেছিলেন রেলশহরের বিধায়ক প্রদীপ। তিনি বলেন, “আমি জেতার পরে বেশ কয়েকবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তেলুগুদের এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। গত ৭ ডিসেম্বর তেলুগুদের দাবিপত্র দিদির কাছে পাঠিয়েছিলাম। দিদি গুরুত্ব দিয়েছেন। মঙ্গলবারই রাজ্য মন্ত্রীসভায় তেলুগুদের ভাষাগত সংখ্যালঘুর স্বীকৃতির দাবি মান্যতা পেয়েছে। এটা তেলুগু সমাজের বড় সাফল্য।”

Advertisement

এ রাজ্যে খড়্গপুর ছাড়াও টিটাগড়, হাওড়া, শ্রীরামপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় তেলুগু সমাজে বসবাস রয়েছে। খড়্গপুর-সহ গোটা রাজ্যে রয়েছে ৭টি তেলুগু মাধ্যম হাইস্কুল। তবে রাজ্যের মধ্যে একমাত্র খড়্গপুর শহরেই সংখ্যাগরিষ্ঠ তেলুগুরা। প্রতি নির্বাচনে এখানে নির্ণায়কের ভূমিকা নেয় তেলুগুরা। তাঁদের দাবি মান্যতা পাওয়ার পরে অন্ধ্র ইয়ং মেন অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভি সেসাগিরি রাও বলেন, “২০১১ সাল থেকে আমরা লড়াই চালাচ্ছিলাম। বর্তমান বিধায়ক প্রদীপ সরকার বারবার প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার কাছে দরবার করেছিলেন। এ বার তিনি দাবিপত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ায় রাজ্য মন্ত্রীসভায় আমাদের ভাষাগত সংখ্যালঘুর দাবি মান্যতা পেল। এর জন্য বিধায়ক ও তৃণমূল সরকারকে ধন্যবাদ।”

মন্ত্রীসভায় মান্যতা পাওয়া তেলুগুদের এই ভাষাগত স্বীকৃতির দাবি এ বার যাবে বিধানসভায়। সেখানে গেজেট প্রকাশ হলেই তেলুগুরা পাবে নানা সুবিধা। সবচেয়ে বড় সুবিধা মিলবে শিক্ষাক্ষেত্রে। মূলত অন্ধ্রপ্রদেশের জাতিগত শংসাপত্র এই রাজ্যে গৃহীত না হওয়ায় তেলুগু স্কুলের সংরক্ষিত পদে নিয়োগে জটিলতা দেখা যায়। জাতিগত সংরক্ষিত পদ ফাঁকা থেকে যাওয়ায় শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে তেলুগু স্কুলগুলি। কিন্তু ভাষাগত সংখ্যালঘু আইন অনুযায়ী তেলুগু মাধ্যম স্কুলগুলিতে সমস্ত পদ সাধারণ হয়ে যাবে। তাতে শূন্যপদ পূরণে জটিলতা থাকবে না।

এই প্রসঙ্গে অন্ধ্র ইয়ংমেন অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কারড়ি তারকেশ্বর রাও বলেন, “ভাষাগত সংখ্যালঘুর স্বীকৃতিতে আমারা শিক্ষাক্ষেত্র থেকে আইনি ও সামাজিক দিকে নানা

সুরক্ষা পাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement