—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
যে জেলা শিক্ষাদীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে অগ্রণী, সেই পূর্ব মেদিনীপুরের প্রাথমিক শিক্ষকদেরই সরকারি ভাবে ডিএলএড বা সমতুল প্রশিক্ষণের তালিকায় ব্রাত্য রাখার অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন এক শিক্ষিকা। ওই মামলায় সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ দিতে স্কুল শিক্ষা দফতর ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের স্কুল শিক্ষা কমিশনার বিভিন্ন জেলায় দূরশিক্ষা পদ্ধতিতে দু’বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।
কিন্তু তালিকা বের হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, সেখানে পূর্ব মেদিনীপুর এবং আর কয়েকটি জেলা শিক্ষকেরা অদ্ভুত ভাবে ব্রাত্য। এর পিছনে অনেকেই রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। কারণ, অধিকারীদের খাসতালুক হিসাবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুর এমন একটি জেলা যেখানে গত লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে ভাল ফল করেছে বিজেপি। অনেকেরই ধারণা, তৃণমূলের শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে তাই ‘সুচিন্তিত’ ভাবেই এই জেলার শিক্ষকদের বাদ দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণের তালিকায়।
গত ২ জুলাই প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের মোট ৪৮৫০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৪ হাজার ১৪৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কিন্তু তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি জেলার কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই! ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় আড়াইশো প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষিক-শিক্ষিকা চরমে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এ বিষয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতির কাছে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সমিতির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সতীশ সাউর অভিযোগ, ‘‘তালিকায় পূর্ব মেদিনীপুর সহ কয়েকটি জেলার কারও নাম নেই। আমরা বিষয়টি সংসদ সভাপতির কাছে জানিয়েছি।’’ নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি অশোক দাস বলেন, ’’আমরা চাই অন্য জেলার সঙ্গে এই জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা হোক।’’
এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমানের বক্তব্য, ’’আমাদের জেলার ২৪৮ জন প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকশিক্ষিকার নামের তালিকা আগেই পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ হবে ও তাতে এই জেলার শিক্ষকদের
নাম থাকবে।’’