ক্যান্সারে আক্রান্ত অর্ণবের জন্য পথে শিক্ষক-পড়ুয়া

ক্যান্সারের যন্ত্রণা কী, তিনি তা জানেন। তাই নিজের স্কুলের এক ছাত্রের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জেনে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। দুঃস্থ ওই ছাত্রের চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পথে নেমে পড়েছেন তিনি।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০১:২৮
Share:

পাশে-আছি: সাহায্য চেয়ে শিক্ষক ও সহপাঠীদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

ক্যান্সারের যন্ত্রণা কী, তিনি তা জানেন। তাই নিজের স্কুলের এক ছাত্রের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জেনে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। দুঃস্থ ওই ছাত্রের চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পথে নেমে পড়েছেন তিনি। নানা জনের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পেতেছেন হলদিয়ার চকদ্বিপা হাইস্কুলের করণিক সনৎ বটব্যাল।

Advertisement

ওই স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব প্রামাণিকের শরীরে মাস দুয়েক আগে ধরা পড়ে ক্যান্সার। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে পুদুচেরির একটি হাসপাতালে। পরিবারের আয় বলতে ছোট একটি পানের বরজ। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর পান্তা ফুরনোর সংসারে কী ভাবে ছেলের চিকিৎসার খরচ আসবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা। কিন্তু ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাতে যে ভাবে তার স্কুল পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে মুখের ভাষা হারিয়েছেন প্রদীপবাবু।

ইতিমধ্যেই স্কুলের শিক্ষকেরা অর্ণবের চিকিৎসার খরচ বাবদ ১৫ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন প্রদীপবাবুর হাতে। শুধু চকদ্বিপা নয়, হলদিয়ার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, গৃহশিক্ষকেরা মিলে ইতিমধ্যেই অর্ণবের চিকিৎসার জন্য টাকা তুলতে ‘বাঁচতে চাই’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি করে ফেলেছেন। বন্ধুর জন্য মঙ্গলবার টাকা জোগাড়ে রাস্তায় নেমেছিলেন চকদ্বিপা হাইস্কুলের শিক্ষক-পড়ুয়া সকলেই। আক্রান্ত বন্ধুর ছবি নিয়ে মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে সহপাঠীদের মুখে ছিল একটাই স্লোগান—‘মানুষ মানুষের জন্য’। যা শুনে চিকিৎসার জন্য সাহায্য দিতে এগিয়ে এসেছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থেকে কিশোর-কিশোরী, চিকিৎসক, আইনজীবী-সহ নানা পেশার মানুষ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিকের চেয়ারম্যান মানস দাশ। শুধু মিছিলেই থেমে থাকেনি সাহায্যের আবেদন। ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকেও। মিছিলের উদ্যোক্তারা জানালেন, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়াদের কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে। সনৎবাবু বলেন, ‘‘ক্যান্সারের যন্ত্রণা কি তা জানি। তার উপর অর্ণবের পরিবার খুবই দুঃস্থ। তাই চুপ করে থাকতে পারিনি।’’

Advertisement

প্রদীপবাবুর কথায, ‘‘গত ১ মার্চ ছেলের চিকিৎসার জন্য পুদুচেরিতে যাই। সেখানেই জানতে পারি ওর শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে। গরীব মানুষ। চিকিৎসার বিপুল খরচ কোথা থেকে পাব তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে ছেলের জন্য যে ভাবে ওর স্কুলের মাস্টারমশাই ও বন্ধুরা এগিয়ে এসেছে, তার তুলনা নেই। ওদের সকলের চেষ্টায় ছেলে সুস্থ হয়ে উঠুক, এটুকুই আশা। ‘বাঁচতে চাই’ এর উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, তাঁরা সাহায্যের জন্য নানা জনের কাছে যাচ্ছেন। তবে রাজ্য সরকার এগিয়ে এলে অর্ণবের চিকিৎসায় আরও সুবিধা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement