এ ধরনের হোটেল এ বার করের আওতায়। নিজস্ব চিত্র
শহরে বাড়ির কাছাকাছি ‘ভ্যাট’এ গৃহস্থালির আবর্জনা ফেলার দিন শেষ হয়েছে আগেই। ভ্যাটের পরিবর্তে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য পুরসভার সাফাই কর্মীরা সকাল হলেই গাড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
বছর তিনেক আগে তমলুক পুরসভার উদ্যোগে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর জন্য আলাদাভাবে পুরসভাকে কোনও কর দিতে হয় না। কিন্তু এ বার শহরের সব হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁর আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য ‘গারবেজ ট্যাক্স’ বা জঞ্জাল কর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তমলুক পুরসভা। মাসে ন্যূনতম ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত এই কর আদায় করা হবে। গত নভেম্বর মাস থেকেই এই কর নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে শহরের হোটেল, লজ এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের নোটিস দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসে ওই কর নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
পুরসভার তরফে প্রতি বছর ‘ট্রেড লাইসেন্স’ বাবদ ফি আদায় করার পরেও আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য নতুন করে ‘জঞ্জাল কর’ চালু নিয়ে হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁ মালিকেরা প্রশ্ন তুলেছেন। এর ফলে তাঁদের আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের পাশাপাশি হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁ থেকেও প্রতিদিন আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁগুলি থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ আবর্জনা সংগ্রহ করতে হয়। এর জন্য অতিরিক্ত কর্মীর দরকার হয়। তাই ওই সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ‘জঞ্জাল কর’ আদায়ের বিষয়ে পুরবোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তারপরেই শহরের সব হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁ মালিকদের নোটিস দিয়ে তা জানানো হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, তমলুক শহরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোট ৩১টি হোটেল, ৮টি লজ ও ১৩টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। হোটেলগুলির অধিকাংশই মূলত খাওয়ার জন্য। কিছু থাকার হোটেলও রয়েছে। এই সব হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন বহু মানুষ খাওয়া-দাওয়ার ফলে অনেক আবর্জনা জমা হয়। পুরসভার সাফাই কর্মীদের অভিযোগ, কিছু হোটেল, লজ ও রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ আবর্জনা রাস্তার ধারে ফেলে দেন। এর ফলে ওইসব আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়। আবর্জনা সংগ্রহ করতে অনেক সময় চলে যায়। পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর চন্দন প্রধান বলেন, ‘‘বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির আবর্জনা সাফাই করতে আলাদা করে কর আদায়ের ক্ষমতা পুরসভার আছে। পুর আইন মেনেই হোটেল, লজ ও রেস্তরাঁগুলির আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য ‘জঞ্জাল কর’ চালু হয়েছে।’’
পুরসভার সাফাই বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক উত্তম জানা বলেন, ‘‘পুর দফতরের স্বাস্থ্যবিভাগ সতর্ক করে দিয়েছে, ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় ফেলা যাবে না। এর জন্য বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা আরও ভাল করার জন্য হোটেল, লজ, রেস্তরাঁগুলির আবর্জনা রাস্তায় না ফেলে ড্রামে ভরে রাখতে বলা হয়েছে। সাফাই কর্মীরা গিয়ে সেখান থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। এর জন্য প্রতি মাসে পুরসভা নির্দিষ্ট হারে কর আদায় করবে। চলতি মাস থেকেই ওই কর নেওয়া হবে।’’