Suvendu Adhikari

Suvendu Adhikari: বন্দরে নোঙর রাখতে মরিয়া শুভেন্দু

দীর্ঘদিন সাংসদ, হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকায় শুভেন্দুর প্রভাব এখনও হলদিয়া শিল্পাঞ্চল রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১ ০৬:২৫
Share:

ফাইল চিত্র।

বিধানসভা ভোটে শিল্পাঞ্চলে প্রথমবার পদ্ম ফুটেছে এবার। সেই ভোটের মাস ছ’য়েকের ব্যবধানে হলদিয়ায় ফের নির্বাচনী দামামা। পুরসভা, লোকসভা বা বিধানসভার মতো বড় নির্বাচন না হলেও আজ, শুক্রবার রয়েছে হলদিয়া বন্দরের ‘ডক ইনস্টিটিউটে’র পরিচালন কমিটির নির্বাচন। যা ঘিরে রাজনীতির সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক কষা চলছে শিল্পশহরে। কারণ, এই লড়াই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে সরাসরি বিজেপির নয়। বরং শুভেন্দু অধিকারীর ‘ছায়া’র সঙ্গে!

Advertisement

দীর্ঘদিন সাংসদ, হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান থাকায় শুভেন্দুর প্রভাব এখনও হলদিয়া শিল্পাঞ্চল রয়েছে। তার জেরেই ডক ইনস্টিটিউটে নিজেদের দখল রাখতে মরিয়া ঘাসফুল শিবির। দিন কয়েক আগেই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করে গিয়েছেন দলের সদস্যদের নিয়ে। তার পরেও বন্দর চত্বরে কান পাতলে একটাই প্রশ্ন শোনা যাচ্ছে- ‘শুভেন্দুর অদৃশ্য সমর্থন কোন
দিকে যাবে’!

দু’বছর অন্তর হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউটের নির্বাচন হয়। ১৯টি আসনের মধ্যে সহ-সভাপতি পদে সর্ব সম্মতিক্রমে মনোনীত করা হয়। ২০১৯ সালের নির্বাচনে বাকি ১৮টি আসনের মধ্যে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন ‘সিটু’ পেয়েছিল আটটি আসন। তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হস্তক্ষেপে দুটি সংগঠন ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ এবং ‘এনইডব্লিউডব্লিউ’ যৌথভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তারা পেয়েছিল ন’টি আসন। আর বিজেপি সমর্থিত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ একটি আসনে জয়ী হয়েছিল। এবারের নির্বাচনে রয়েছে পাঁচটি প্যানেল। ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ এবং ‘এনইডব্লিউডব্লিউ’, সিটু, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ এবং এসইউসি।

Advertisement

গত ডিসেম্বরের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপরই এবার ‘ডক ইনস্টিটিউটে’র নির্বাচনে পৃথকভাবে সব আসনে প্রার্থী দিয়েছে ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ এবং ‘এনইডব্লিউডব্লিউ’। স্থানীয় শ্রমিক মহলের দাবি, ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ আসলে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের পৃষ্ঠপোষকতায় চলে।

এবার শুভেন্দু যখন বিজেপিতে, তখন তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্যামলের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি সংগঠনও পৃথকভাবে নেমেছে ভোটের ময়দানে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি ভাল ফলাফল করবে বিজেপি! না বেশি আসন পাবে ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’? এ প্রসঙ্গে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলি অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের সদস্য সংখ্যা হাতেগোনা। তা সত্ত্বেও গত বার নির্বাচনে আমি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট প্রাপক ছিলাম। শ্রমিকেরা পরিষেবা দেখেই পাশে দাঁড়ান। বন্দরের ভোটে শুভেন্দু আমাদেরকে সমর্থন জানাবেন।’’ এই বিতর্কিত বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ‘কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট পার্মানেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী।

ভোটে আশাবাদী আইএনটিটিইউসি সমর্থিত এনইডব্লিউডব্লিউ। সংগঠনের সম্পাদক অসীম সূত্রধর বলছেন, ‘‘অগে শ্রমিকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করে ধরে রাখা হত। সেই পদ্ধতিতে বদলেছে। শ্রমিক এবং সংগঠনের সকল সদস্যদের আন্তরিকভাবে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। তার সুফলও নির্বাচনে পাব। শুভেন্দুর কোনও প্রভাব কাজে দেবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement