সুতাহাটায় শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র।
করোনা-মুক্ত হওয়ার পরে প্রকাশ্য মঞ্চে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েক মাসের মধ্যে মঙ্গলবারই তাঁকে প্রথম দেখা গেল প্রশাসনিক মঞ্চে।
বেশ কয়েক মাস ধরে জেলা জুড়ে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে শুভেন্দুকে দেখা যায়নি। দলহীন নানা জনসংযোগ কর্মসূচি করছিলেন মন্ত্রী। সরকারি অনুষ্ঠান, ক্যাবিনট বৈঠকও কার্যত ‘এড়িয়ে’ যাচ্ছিলেন শুভেন্দু।
তবে মঙ্গলবার তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী ভবনে আয়োজিত ‘সমন্বয় সভা’য় হাজির ছিলেন। সেখানে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের তরফে দুর্গাপুজোর ‘গাইড ম্যাপে’র উদ্বোধন ও পুজো কমিটিগুলোকে রাজ্য সরকারের ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়।
পুজোর গাইড ম্যাপটি উদ্বোধন করেছেন শুভেন্দু নিজে। তবে তাঁকে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সরকারি অনুষ্ঠানের ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে করোনা সতর্কতা বার্তা দিয়েছেন করোনা-জয়ী নেতা।
শুভেন্দু এ দিন বলেন, ‘‘পুজো উদ্যোক্তাদের সরকারি ১১ দফা নির্দেশাবলী মেনে চলা কাম্য। জেলাতে মৃত্যুর হার রাজ্য ও দেশের তুলনায় অনেক কম। সুস্থতার হার এ রাজ্যে দেশের তুলনায় অনেক বেশি। আমি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। বিধি মেনে ১৭ দিন পর এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি।’’ দিন কয়েক আগে করোনা মুক্ত হয়ে শুভেন্দু যান তমলুকে বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিতে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব প্রমুখ। এত দিন পরে কোনও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে শুভেন্দুর হাজির হওয়া ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের পর থেকে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব এবং তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জেলা যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। দলের অনুষ্ঠান এড়িয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি করেছেন। শুভেন্দুর অনুগামীরা তাঁর ছবি গলায় ঝুলিয়ে কর্মসূচি করেছেন। এ সবের মধ্যে প্রশাসনিক মঞ্চে শুভেন্দুর হাজিরায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি দলের সঙ্গে দূরত্ব কমছে! বদলাচ্ছে সমীকরণ!
এ নিয়ে বিজেপি-র তমলুক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পালের কটাক্ষ, ‘‘উনি নিজেও জানেন না উনি কী রাজনীতি করছেন।’’