শুভেন্দু অধিকারী।—ফাইল চিত্র
জেলায় ‘অধিকারী গড়’ কাঁথিতে এবার পুর নির্বাচনে টিকিট পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দেবেন নাকি রাজ্য নেতৃত্ব, ইতিমধ্যেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে দলে। দলের একাংশ কাউন্সিলরদের মধ্যে তা নিয়ে বিভ্রান্তিও রয়েছে। এই আবহে কাঁথির পুরভোটে রণকৌশল চূড়ান্ত করতে সভা ডাকলেন শুভেন্দু। ১৫ মার্চ কাঁথি শহরের ডরমিটরি ময়দানে ওই সভা হবে। পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলর-সহ প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বাছাই করা কর্মীদের সভায় ডাকা হবে বলে শহর তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ কাঁথিতে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে কর্মিসভা ডেকেছিলেন দলীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা জেলা যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি (বিধায়ক অখিস গিরির পুত্র)। তারপর থেকেই গোটা কাঁথি জুড়ে ছড়িয়েছে নানাবিধ জল্পনা। ‘অধিকারী গড়ে’ দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার জনসংযোগ রক্ষার দায়িত্ব জেলা রাজনীতিতে ‘অধিকারী বিরোধী’ বলে পরিচিত রামনগরের বিধায়ক অখিল পুত্র সুপ্রকাশকে দেওয়ায় পুরভোটে কাকে কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলেই। কারণ এতদিন প্রার্থী বাছাই ‘অধিকারী গড়’ থেকেই ঠিক হত বলে স্থানীয় নেতৃত্ব সূত্রে খবর। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আর তা হবে কি না তা নিয়ে দলের কর্মী-সমর্খদরে অনেকেই সন্দিহান।
দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক ও রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর পরিবর্তে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সুপ্রকাশকে দলের প্রার্থী করা হতে পারে বলেও জল্পনা অব্যাহত। অখিল পুত্রের ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরিবহণমন্ত্রীর ডাকা কর্মিবৈঠক তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক নহল। ওই সভায় দলের নির্বাচিত কাউন্সিলর, প্রতিটি ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সভাপতি এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন। দলের পক্ষ থেকে এর জন্য ৬ হাজার আমন্ত্রণপত্র বিলি করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
‘অধিকারী বিরোধী’ শিবিরের অবশ্য দাবি, ওই কর্মিসভাতেও শুভেন্দুবাবু পুরভোটে টিকিট বিলি নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবেন না। বিরোধী শিবিরের এক নেতা জানান, অতীতে কাঁথি পুরসভার নির্বাচনে মুখ বন্ধ করা খামে টিকিট পাঠানো হত। এতে নিজেদের পছন্দমাফিক লোকেদের প্রার্থী করানো হতো বলে অভিযোগ উঠত। যার ফলে কাঁথি পুর এলাকায় জনসংযোগ এবং উন্নয়নের কাজ ঠিকমতো হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। তাই এ বার কাঁথি পুর এলাকায় কারা দলের প্রার্থী হবেন তা রাজ্য নেতৃত্বই চূড়ান্ত করবে বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। জেলা তৃণমূলের বিশেষ সূত্রে খবর, তৃণমূল ভবন থেকে সরাসরি দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। যদিও ১৫ মার্চ কর্মিসভায় শুভেন্দু মূলত পুরএলাকার কর্মীদের নির্বাচন সংক্রান্ত পরামর্শ দেবেন বলে শহর তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
কাঁথি শহর তৃণমূল সভাপতি সিদ্ধার্থ মাইতি বলেন, ‘‘পুরভোটে দলের কর্মীরা কে কোন দায়িত্ব পালন করবেন, সে সম্পর্কে শুভেন্দুবাবু ওই দিন স্পষ্ট নির্দেশ দেবেন। আর পুরভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হলে কারা প্রার্থী হবে সেই ঘোষণাও করবেন তিনিই।’’