মমতার প্ররোচনায় হামলা, দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর। — গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর হামলার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) এমনই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর প্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার-সহ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন তিনি। জেলাশাসকের কাছে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটের মুখে পুরনো ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করার আসল উদ্দেশ্য হল, রাজ্যের শাসকদলের বুথ এজেন্টদের গ্রেফতার করানো। তাতে তৃণমূলের ভোট ব্যবস্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যার ফয়দা তুলে জিতে যাবেন বিজেপি প্রার্থী। এই উদ্দেশেই বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি এনআইএ-র এক পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন বলে প্রচারসভা থেকে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রমাণ তৃণমূলের হাতে আছে বলে দাবি করেছিলেন মমতা। যদিও যাবতীয় অভিযোগকে শুরু থেকেই উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। ভূপতিনগরের ঘটনার বেশ কিছু ক্ষণ পর তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে বার্তা দেন শুভেন্দু। তাতে তিনি পাল্টা দাবি করেন, মমতার বার বার প্ররোচনা দেওয়ার ফলেই এই ঘটনা। কোচবিহারের মাথাভাঙার প্রচারসভা থেকেও মমতা এনআইএ-কে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছিলেন বলেও শুভেন্দু দাবি করেছেন। ওই সমাজমাধ্যম বার্তায় বিরোধী দলনেতা দাবি করেছেন যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। কমিশনের কাছে রাজ্য পুলিশের প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার, ভূপতিনগর থানার ওসি এবং কাঁথির এসডিপিও-র বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
ভূপতিনগরের ঘটনা নিয়ে সিপিএম, কংগ্রেসেরও সুর কার্যত একই। তাদেরও দাবি, এই ঘটনাই প্রমাণ করল যে, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। তার পাল্টা জবাব এসেছে তৃণমূলের তরফ থেকেও। রাজ্যের শাসকদলের পাল্টা দাবি, এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা কমিশনের হাতে। তাই এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূল নেতারা। পুলিশ সূত্রে খবর, এনআইএ গোয়েন্দারা ভূপতিনগরে যাবেন সে কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয় থানায়। কিন্তু অভিযোগ, এনআইএ স্থানীয় থানার বাহিনী পৌঁছনোর অপেক্ষা না করেই গ্রামে ঢুকে যায় এবং তল্লাশি শুরু করে। সেই সময়ই প্রথমে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলাইচরণ মাইতিকে গাড়িতে তোলে এনআইএ। তার পর যায় মনোব্রত জানার বাড়িতে। মনোব্রতকে গাড়িতে তুলতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। গাড়ি ভাঙচুর করা হয় তাঁদের। আহত হন এক আধিকারিক। তা নিয়েই এখন উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।