ফুল্লরা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
পেরিয়ে গিয়েছে ৮ বছর। অবশেষে নেতাই-গণহত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং অভয় এস ওকার ডিভিশন বেঞ্চ ফুল্লরার জামিনের নির্দেশ দিয়েছেন।
ফুল্লরার অন্যতম আইনজীবী আলি রহিম জানান, এ দিন জামিন মঞ্জুর করেছে শীর্ষ আদালত। ২০১৪ সালের ৩০ জুন গ্রেফতার হন ফুল্লরা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নেতাই কাণ্ডের জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিলেন। তাঁর বয়স এখন ৬৫। দীর্ঘ সময় জেলবন্দি রয়েছেন ফুল্লরা। তাই তাঁকে শর্তাধীন জামিন দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এখন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি আছেন ফুল্লরা। জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি মেদিনীপুরে আসার পরে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে তিনি জেল থেকে ছাড়া পাবেন।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় চার মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসীর। জখম হন ২৮ জন। প্রথমে মামলার তদন্ত করে সিআইডি। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ওই ঘটনায় সিপিএমের তৎকালীন বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পাণ্ডে-সহ ২০ জন সিপিএম নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন। ধৃতদের অন্যতম নেতাই গ্রামের বাসিন্দা ফুল্লরা ওই সময় সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি জেলবন্দি থাকাকালীন পশ্চিম মেদিনীপুর ভেঙে পৃথক ঝাড়গ্রাম জেলা হয়েছে। এখনও অনুজ ও ফুল্লরাকে দলের ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির সদস্য পদে রাখা হয়েছে।
সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘এ দিন শীর্ষ আদালত ফুল্লরাদির জামিন মঞ্জুর করেছে। তাঁর বয়সজনিত শারীরিক সমস্যাও রয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।’’ আর সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, ‘‘হাই কোর্টে জামিন বাতিল হওয়ার পরে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তাঁর সহকারীরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে অক্লান্ত পরিশ্রম করার ফলেই জামিন হয়েছে। নেতাই কাণ্ড আসলে তৃণমূল ও মাওবাদী জোটের ষড়যন্ত্রের ফল।’’