school

school: ‘ন্যাসে’র হাত ধরেই ফের স্কুলে পড়ুয়ারা

শেষ বেলায় জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে ওই পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত স্কুলগুলিতে। শেষ ২০১৭ সালে ন্যাস পরীক্ষা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১১
Share:

গোয়ালতোড়ের কিয়ামাচা হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ। নিজস্ব চিত্র।

সরকারি ভাবে স্কুল খোলার কথা ১৬ নভেম্বর। তার আগেই ১২ নভেম্বর আছে ‘ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে’র (ন্যাস) পরীক্ষা। সেই জন্য দুই জেলার বেশ কিছু স্কুল খুলে গিয়েছে নির্ধারিত সময়ের আগেই। বেশিরভাগ স্কুলে বিশেষ ক্লাসও হয়েছে। কোনও কোনও স্কুল অবশ্য একেবারে ওই পরীক্ষার দিন খুলবে। শেষ বেলায় জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে ওই পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত স্কুলগুলিতে।

Advertisement

শেষ ২০১৭ সালে ন্যাস পরীক্ষা হয়েছিল। স্কুলস্তরে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা কেমন এগোচ্ছে, সার্বিক পঠনপাঠনের মান কেমন প্রভৃতি বিষয় সমীক্ষার জন্যই এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। আগামী ১২ নভেম্বর অফলাইনেই ন্যাস পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের ন্যাস সেল আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) কুহুক ভূষণ মানছেন, ‘‘ন্যাস পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে যে সব পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।’’ জানা যাচ্ছে, ন্যাসের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৩৬টি স্কুলকে নির্বাচন করা হয়েছে। এরমধ্যে যেমন প্রাথমিক স্কুল রয়েছে, তেমন হাইস্কুলও রয়েছে। তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই পরীক্ষা দেবে। একটি স্কুল থেকে একটি শ্রেণির পড়ুয়ারাই পরীক্ষায় বসবে। কোন স্কুলের কোন শ্রেণির পড়ুয়ারা এই পরীক্ষা দেবে, তার তালিকা আগেই চূড়ান্ত হয়েছে। শ্রেণিপিছু গড়ে ৩০ জন পড়ুয়া ন্যাস পরীক্ষা দেবে। সেই হিসেবে জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪,০৮০। পড়ুয়ারা নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষা হবে সকাল সাড়ে দশটা থেকে। তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা দেড় ঘন্টা। অষ্টম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষা দু’ঘন্টা।

ন্যাসের পরীক্ষার জন্য যে স্কুলগুলি বাছা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গোয়ালতোড়ের কিয়ামাচা হাইস্কুল। এই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই পরীক্ষা দেবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে স্কুল চত্বর। প্রধান শিক্ষক অনুপকুমার পড়িয়া বলেন, ‘‘ন্যাসের নির্দেশিকা মেনে শ্রেণিকক্ষ, বেঞ্চ সব ঠিকঠাক করা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের চার দিনের প্রশিক্ষণ পর্ব মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে।’’ গড়বেতার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুল চত্বর পরিষ্কার করা, ছাত্রছাত্রীদের খবর দিয়ে স্কুলে নিয়ে আসা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা—সবকিছুই অল্প সময়ের মধ্যেই করতে হচ্ছে। যা অপ্রত্যাশিত তো বটেই।’’ কয়েকটি প্রাথমিক ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রকেও বাছা হয়েছে ওই পরীক্ষার জন্য। তার মধ্যে একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকার আশঙ্কা, ‘‘দীর্ঘদিন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীই পড়াশোনার মধ্যে নেই। এই অবস্থায় এই পরীক্ষা দিতে কতজন আসবে কে জানে!’’ অনেক স্কুল অনলাইনেও প্রস্তুতি ক্লাস নিয়েছে। শালবনির জয়পুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা ন্যাস পরীক্ষা দেবে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘ন্যাসের প্রশ্ন হয় বিষয়ভিত্তিক। অনলাইনে প্রস্তুতি ক্লাস হয়েছে।’’ মেদিনীপুরের রয়্যাল অ্যাকাডেমির দশম শ্রেণির পড়ুয়ারাও ন্যাস পরীক্ষায় বসছে। স্কুলের অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলই বলেন, ‘‘নমুনা প্রশ্নপত্র অভিভাবকদের দেওয়া হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা প্রস্তুতি সেরেছে।’’

Advertisement

জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে ঝাড়গ্রামেও। সূত্রের খবর, এই জেলায় ১০০টি স্কুলের পড়ুয়ারা ওই পরীক্ষায় বসবে। তার মধ্যে বেশ কিছু স্কুলে ১, ২, ৮ ও ৯ নভেম্বর পড়ুয়াদের ডেকে বিশেষ ক্লাস হয়ছে। বেলপাহাড়ি এস সি হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা ওই পরীক্ষা দেবে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর সংস্কারের জন্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা আবেদন করা হয়েছিল। সেই কাজ শুরু হয়নি। তার মধ্যেই এই পরীক্ষা। আমরা আপাতত স্কুলের তহবিল থেকে ক্যাম্পাস পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্যানিটাইজ় করেছি। চার দিন বিশেষ ক্লাস হয়েছে। দু’টি ক্লাসে ভাগ করে পড়ুয়াদের বসানো হয়েছিল।’’ ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই পরীক্ষা দেবে। সেখানকার প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘একটি সরকারি পরীক্ষা হওয়ার জন্য ক্লাসঘরগুলি আগেও স্যানিটাইজ় করা হয়েছিল। ফের স্যানিটাইজ় করে ক্লাস করানো হয়েছে। শৌচালয়গুলি পরিষ্কার করা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement