মানবিক: স্কুলের সামনে রাখি বিক্রি ছাত্রছাত্রীদের। নিজস্ব িচত্র
কেরলের বন্যাদুর্গতদের জন্য কিছু করার ইচ্ছেটা ছিলই। সেই ইচ্ছেপূরণের মাধ্যম হিসেবে রাখিকেই বেছে নিল মাদপুরের ভান্ডারিয়া কালিকা হাইস্কুলের পড়ুয়ারা।
দিনকয়েক আগে থেকে পড়ুয়ারা রাখি তৈরি শুরু করেছিল। স্কুলের গেটে পসরা সাজিয়ে আর গ্রামে গ্রামে ঘুরে সেই রাখি বিক্রি করে যে হাজার চারেক টাকা হাতে এসেছে কেরলের বন্যাদুর্গতের জন্য সেটাই পাঠাবে ওরা। প্রধান শিক্ষক রবিআশিস কারক বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের ওই উদ্যেগে আমরা গর্বিত। দুঃসময়ে অন্যে পাশে দাঁড়ানোটাই তো প্রকৃত শিক্ষা।’’
কয়েক বছর ধরে এই স্কুলের পড়ুয়ারা রাখি বানায়। স্কুলেই হয় রাখিবন্ধন উৎসব। এ বার কেরলের কথা মনে রেখে প্রত্যেকে পাঁচটি করে বেশি রাখি বানিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সেই রাখি কিনেছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে পথে নামেন শিক্ষকরাও। অষ্টম শ্রেণির লিপি বেরা, প্রিয়াঙ্কা বেরা, নবম শ্রেণির শুভম বেরা চৌধুরী, মানস বেরা, দশম শ্রেণির ফণিভূষণ চক্রবর্তী, রুমা পাত্ররা এমন কাজ করতে পেরে খুশি। লিপি বলছিল, ‘‘ভবিষ্যেতেও এমন কাজ করতে চাই।’’
রাখির দিন মিষ্টিমুখের জন্য কিছু টাকা দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের মুখ থেকে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি পান্নালাল বেরা শোনেন, ‘‘না স্যর, এ বার মিষ্টি খাব না। ওই টাকাও কেরলে পাঠাব।’’ গর্বিত পান্নালালবাবুও। মেদিনীপুর সদর ব্লকের পলাশি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারাও রবিবার নিজেদের হাতে তৈরি রাখি পথচলতি মানুষকে পরিয়েছে, সেই সঙ্গে কেরলের বন্যাদুর্গতদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছে। প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলেন, “ঐক্যের বন্ধনের বার্তা দিতেই এই আয়োজন।’’
শিক্ষানিকেতনের পক্ষ থেকে রবিবার রেল হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে রাখিবন্ধন উৎসব হয়েছে। ২৫জন খুদে পড়ুয়া ৬০জন রোগীর হাতে রাখি বেঁধে ফল-মিষ্টি-কেক-বিস্কুট বিতরণ করেছে। খড়্গপুর গ্রামীণের মাতকাতপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়ারা আবার পুলিশের সহযোগিতায় হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের দাঁড় করিয়ে রাখি বেঁধে, চকোলেট দিয়ে পথ নিরাপত্তার বার্তা দিয়েছে। সবংয়ের তেমাথানি মনসারাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা নানা ধরনের গাছে রাখি বেঁধে সবুজ বাঁচানোর শপথ নিয়েছে।