কর্মশালায় পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
পুরনো ঘটনা, অভিজ্ঞতা সাজিয়ে নিলেও গল্প হয়। সে গল্প একেবারেই মানুষের গল্প, মানুষ হওয়ার গল্প। রবিবার পড়ন্ত বিকেলে ঝাড়গ্রামের লবকুশ গ্রামের আংশিক বুনিয়াদী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ভাবেই মোহিত, দীপন, গায়ত্রীরা গল্প বলতে শিখল!
পড়ুয়াদের গল্প শোনার জন্য হাজির ছিলেন অভিভাবক ও গ্রামবাসী। ছিলেন বিশিষ্টজনরাও। কর্মশালায় খুদে পড়ুয়াদের গল্প শেখাতে এসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের গল্পকার দিনকর শর্মা।
আর পাঁচটা স্কুলের থেকে লব-কুশ আংশিক বুনিয়াদি বিদ্যালয়টি একেবারে অন্য রকম। স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানপ্রাপ্ত রমণীমোহন মণ্ডল ২০১৩ সালে অবসর নেওয়ার পরেও নিয়মিত স্কুলে আসেন। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রমণীমোহনবাবুর পাশাপাশি, স্কুলের বর্তমান টিচার-ইনচার্জ শুভাশিস মণ্ডল ও সহশিক্ষক হর্ষনারায়ণ মণ্ডলরা পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পড়ুয়াদের প্রতিভা ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের লক্ষ্যে শনিবার থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তিনদিনের ‘শিশু ও কিশোর মেলা’। সহযোগিতায় ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমি।
কর্মশালায় দিনকর শর্মা জানালেন, দৈনন্দিন চোখে দেখা নানা অভিজ্ঞতা কিংবা কোনও পুরনো ঘটনা পর পর সাজিয়ে নিলেও গল্প তৈরি করা যায়। তবে ভাব প্রকাশ করতে হবে সহজ ভাবে। দিনকরের আক্ষেপ, এখন গ্রামাঞ্চলেও অণু পরিবার হয়ে যাচ্ছে। ঠাকুমা, দিদিমাদের কাছে গল্প শোনার সুযোগ হয় না অনেক শিশুর। দিনকরের কথায়, “ভাল গল্প বলতে পারলে পরীক্ষার উত্তরপত্রেও তার প্রতিফলন পড়ে। ভাল কথা দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায়, জীবনে সফল হওয়া যায়।”
এ দিন কর্মশালা শেষে খুদেরা শোনাল ইঁদুর দৌড়ে না গিয়ে তারা বড় হতে চায় নিজেদের মতো করে। দিনকরও মানুষের দু’টি হাতের সহাবস্থানের গল্প শোনালেন। নাট্যকর্মী কুন্তল পাল, দেবলীনা দাশগুপ্ত পাল, বাচিকশিল্পী সুমিতা বসাক প্রমুখ বিশিষ্টজনরা বিভিন্ন কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। আজ, সোমবার বিকেলে শিশুদের সমবেত ঘুড়ি ওড়ানো দিয়ে মেলা শেষ হবে।