কলেজের হস্টেল থেকে উদ্ধার হল এক ছাত্রের দেহ। রবিবার সকালে মহিষাদল রাজ কলেজের হস্টেলের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত হৃষীকেশ দলুই (২১) সমাজতত্ত্ব অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ভূপতিনগর থানা এলাকার উত্তর নিশ্চিন্তা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও হস্টেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র হিসেবে বরাবরই কৃতী ছিলেন হৃষীকেশ। ওই ছাত্রের বন্ধুরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কলেজের এক সহপাঠিনীকে তিনি প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ছাত্রী রাজি ছিলেন না। মহিষাদল রাজ কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য তিলক চক্রবর্তী জানান, গত ২১ জুন হৃষীকেশ কলেজে এসেছিলেন রেজাল্ট নেওয়ার জন্য। ২২ তারিখ তাঁর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি হস্টেলেই ছিলেন। এমনকী ওই সহপাঠিনীকে বারবার প্রেম প্রস্তাবও দেন বলে অভিযোগ। রাতে বহুবার ফোনও করেন ওই তরুণীকে। ছাত্রীটি হৃষীকেশকে রাতে ফোন করতে বারণ করেন। শনিবারও ওই ছাত্রী ফোন না ধরায় রবিবার ভোর রাতে হস্টেল থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্রীদের হস্টেলে ঢিল মারেন হৃষীকেশ। সেই আওয়াজে ছাত্রীটি বেরিয়ে আসেন। তখন তাঁকে ফোন না ধরার কারণ জিজ্ঞাসা করেন হৃষীকেশ। এমনকী প্রস্তাব না মানলে সে আত্মহত্যার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। কিন্তু তাতেও ওই তরুণী রাজি হয়নি।
তারপর হস্টেলে ফিরে এসেছিলেন হৃষীকেশ। রবিবার সকালে হস্টেলের নিরাপত্তাকর্মী দেখেন, রান্নাঘর থেকে এক যুবকের দেহ ঝুলছে। খবর দেওয়া হয় মহিষাদল থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন হৃষীকেশ।
তবে পুলিশের এই যুক্ত মানতে নারাজ হৃষীকেশ দলুইয়ের বাবা অখিল দলুই। তাঁর দাবি, এটা আত্মাহত্যা নয়, খুন। তিনি এই বিষয়ে পুলিশে খুনের অভিযোগও দায়ের করেছেন। হৃষীকেশের বড় দাদা অনিমেষ দলুই বলেন, ‘‘ভাইয়ের প্রেমের কথা আমাদের পরিবার জানত না। আমরা বিশ্বাস করি না, ভাই আত্মহত্যা করেছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
খুনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুনের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত খুন কি না বলা যাবে না।” কলেজের অধ্যক্ষ অসীমকুমার বেরার কথায়, ‘‘ছেলেটি ৫৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। মার্কশিট নিতে এসে হস্টেলে থেকে গিয়েছিল। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল জানি না। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।’’