ফাইল চিত্র।
দু’বছর আগে উদ্ধার হয়েছিল ছেলের দেহ। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বাবা। শুক্রবার ওই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর পরেই আশার আলো দেখছে সাহারুল আলি খানের পরিবার।
২০১৭ সালের ২৪ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে জগন্নাথপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে উদ্ধার হয় পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহারুলের দেহ। পুলিশ প্রথমে বিষয়টি দুর্ঘটনা বললেও সাহারুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। নিম্ন আদালতের নির্দেশে তাতে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়।
হাইকোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার ‘সিট’ গঠনের যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে খুশি সাহারুলের বাবা আক্রম আলি খান। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে ছাত্র রাজনীতি করত। সেই সময় ওর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী সব সময় ওর পিছনে লেগে থাকত। কলেজে প্রায়ই ঝামেলা হত। খুব অল্প সময়ে আমার ছেলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তাই ওর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতারা ওকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে আমি খুশি। মনে হচ্ছে এবার দোষীরা শাস্তি পাবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কনকপুরের বাসিন্দা তথা গাড়ি ব্যবসায়ী আক্রমের একমাত্র ছেলে চিলেন সাহারুল। ২০১৬ সালে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে ভর্তি হন সাহারুল। পড়াশোনার পাশাপাশি যোগ দেন সক্রিয় ছাত্র রাজনীতিতে। সাহারুলের নেতৃত্বে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংগঠন শক্তিশালী হয়। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বেরও সুনজরে পড়েন সাহারুল।
২০১৭ সালে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জিতে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হন সাহারুল। এরই মধ্যে কলেজে সক্রিয় ওঠে টিএমসিপির অন্য এক গোষ্ঠী। সেই গোষ্ঠীর সঙ্গে সাহারুল ও তাঁর অনুগামীদের প্রায়ই গণ্ডগোল লেগে থাকত বলে অভিযোগ সাহারুলের পরিবারের।
সাহারুলের পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের এক মার্চের দুপুরে বন্ধুর সঙ্গে কেশাপাটের দিকে গিয়েছিলেন সাহারুল। মেচগ্রাম মোড়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় বাবা আক্রমের। ওই রাতে দাসপুর থানা থেকে সাহারুলের বাবাকে ফোন করে জানানো হয়, লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে সাহারুলের। যদিও সাহারুলের পরিবারের দাবি, মৃতদেহের মাথার পিছনে একটি আঘাতের চিহ্ন ও তলপেটে ধারাল কিছু দিয়ে কাটার চিহ্ন ছিল।
সাহরুলের পরিবারের অভিযোগ, খুনের অভিযোগ পেয়েও পুলিশ সাতজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেনি। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। তবে ঘটনার তদন্তে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আক্রম।