এই রাস্তাই পাকা হওয়ার কথা ছিল। নিজস্ব চিত্র।
ধুলো ওড়া এবড়ো খেবড়ো মাটির রাস্তার ধারে জ্বলজ্বল করছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার বোর্ড। তাতে লেখা আছে, রাস্তার কাজ শেষের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। কিন্তু পিচ রাস্তা কোথায়! ঝাড়গ্রাম ব্লকের সর্ডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতের বহড়াকোটা থেকে মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মালিখাল যাওয়ার সাড়ে ৬ কিলোমিটার মাটির রাস্তায় আদপে কোনও কাজই হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাগজে কলমে রাস্তাটি পিচ হয়েছে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই রাস্তাটি দিয়ে ঝাড়গ্রাম ব্লকের সর্ডিহা এবং মানিকপাড়া এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোটা বিশেক গ্রামের মানুষের নিত্য যাতায়াতের রাস্তা বলতে এটাই।
বেহাল রাস্তায় সাইকেল ও মোটরবাইক উল্টে প্রায়ই আরোহীরা জখম হন। তাছাড়া মাটির এই রাস্তাটি বর্ষাকালে এক হাঁটু কাদায় ডুবে যায়। মানিকপাড়া-খালশিউলি পিচরাস্তায় বহড়াকোটা এলাকা থেকে পশ্চিম-উত্তরমুখী প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার মাটির রাস্তাটি মালিখাল পর্যন্ত গিয়েছে। কংসাবতী তীরবর্তী ছোট আঙারকুড়িয়া, ছানাপাড়া, ভেটলি, মালিখাল, জয়পুরের মতো গ্রামে প্রচুর সব্জি চাষ হয়। নদীর অপর প্রান্তে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া এলাকার উপরডাঙা, গজপতিয়া, এল্লাবনি, কেলামারিয়ার মতো গোটা পনেরো গ্রামেও ব্যাপক চাষ হয়। ছানাপানার কাছে ফেয়ার ওয়েদার বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে সদর ব্লকের কয়েকশো সব্জি চাষি ও দুধ বিক্রেতা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে মানিকপাড়ায় সামগ্রী বিক্রি করতে যান। নদী তীরবর্তী দু’টি ব্লকের উৎপাদিত সিংহভাগ সব্জি প্রতিদিন সর্ডিহা থেকে ট্রেনে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে রপ্তানি করা হয়।
ছানাপাড়া গ্রামের সব্জিচাষি সুভাষ রায়, লালমোহন মাহাতোদের বক্তব্য, “বোর্ডে কাজ শেষের তারিখ লেখা আছে। কিন্তু রাস্তাটির কোনও কাজই হয়নি।” স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় মাটির রাস্তাটি পিচ করার জন্য ৩ কোটি ৫৯ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ঝাড়খণ্ডের একটি ঠিকদারি সংস্থা কাজের বরাত পায়। ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে মাটি কাটার কাজ শুরুও হয়। কয়েকদিন পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, তৃণমূলের একাংশের অবাঞ্ছিত হস্তেক্ষেপের দরুন সংস্থাটি পাততাড়ি গোটায়।
ঝাড়গ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অনিল মণ্ডল বলেন, “রাস্তাটির কাজ যাতে শুরু হয় সেজন্য প্রশাসনিক মহলে নিয়মিত দরবার করছি।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “সমস্যা কোথায় খোঁজ নিয়ে দেখছি।”