পাট্টা পাননি বহু জঙ্গলবাসীই

জঙ্গলের জমিতেই বসবাস করেন নয়াগ্রামের বাসিয়াশোল গ্রামের বঙ্কিম ভক্তা, ভুতু মল্লিক, তুলসি মল্লিকরা। ২০১৪ সালে জমির পাট্টা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। পাননি। নতুন করে আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি কিছু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ০০:৩৩
Share:

জঙ্গলের জমিতেই বসবাস করেন নয়াগ্রামের বাসিয়াশোল গ্রামের বঙ্কিম ভক্তা, ভুতু মল্লিক, তুলসি মল্লিকরা। ২০১৪ সালে জমির পাট্টা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। পাননি। নতুন করে আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি কিছু।

Advertisement

জামবনির কার্তিক শবর অবশ্য পাট্টা পেয়েছেন। তবে জমির পরিমাণ মাত্র ২ ডেসিমেল। তাঁর প্রশ্ন, “২ ডেসিম্যাল জমিতে কী হবে? ন্যূনতম ১০ ডেসিমেল ছাড়া কী চলে?” জঙ্গলের অধিকার আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে এমনই ভুরি ভুরি সমস্যা রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জঙ্গলে বসবাস করেন বহু আদিবাসী মানুষ। কারও ঝুপড়ি বাড়ি। কিন্তু নিজের নামে জমি না থাকায় জোটে না আবাসন প্রকল্প। যদিও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের দাবি, ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ৪১৯৮ জনকে এই পাট্টা দেওয়া হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাসের দাবি, “বেশিরভাগ আবেদনকারীকেই পাট্টা দেওয়া হয়েছে। যে কয়েকটি ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে সেক্ষেত্রে তদন্তের জন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে।”

২০০৬ সালের জঙ্গলের অধিকার আইন অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত যে সব মানুষ জঙ্গলের জমিতে বসবাস করবেন বা চাষ করবেন তাঁদের সেই জমি দিতে হবে। তফসিলি হলে কতদিন বসবাস করছেন তা-ও দেখার দরকার নেই। তবে সাধারণ পরিবারকে ন্যূনতম তিন পুরুষ বা ৭৫ বছর বসবাস করার প্রমাণ দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে একটি পরিবার ৪ হেক্টর পর্যন্ত জমির পাট্টা পেতে পারেন। ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকেই রয়েছে জঙ্গল। এ ছাড়াও খড়্গপুর মহকুমার কেশিয়াড়ি, নায়ারণগড়, খড়্গপুর-১, মেদিনীপুর সদর মহকুমার সদর ব্লক, শালবনি, গড়বেতা-১, ২, ৩ ব্লক-সহ বিভিন্ন জায়গায় কম বেশি জঙ্গল রয়েছে। গত ১০ বছরে কতজনকে পাট্টা দেওয়া সম্ভব হয়েছে? প্রশাসনিক পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৫৪৫ জনের আবেদন পেয়েছিল প্রশাসন। তার মধ্যে ৪৮৫৯৯ জনের আবেদন খতিয়ে দেখা হয়েছে। যার মধ্যে বাতিল হয়েছে ৩৫৪০৮টি আবেদন। বাকি ১৩৬৫৮ জনকে ৩৩১১.৩৭ একর জমি পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ৪৮৯৪ জনের আবেদন এখনও খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

এর বাইরেও বহু মানুষ আছেন যাঁরা আবেদনই জানাতে পারেননি। কারণ, ২০০৮ সাল থেকে আবেদন সংগ্রহ শুরু হয়েছিল। সেই সময় মাওবাদী উপদ্রবে বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রশাসন বলে কিছু ছিল না। তাই গত বছর ফের ৩ লক্ষ আবেদনপত্র ছাপিয়ে বিলি করা হয়েছিল। যাতে একজনও পাট্টা থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্য গ্রাম সংসদ ধরে আবেদনপত্র বিলির দাবিও জানাচ্ছে মঞ্চ। সরকারি আমিন দিয়ে জমি পরিমাপ করা, ম্যাপ বানানোর ব্যবস্থা করে শিবিরের মাধ্যনে পাট্টা বিলির দাবি জানিয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement