—প্রতীকী চিত্র।
বিকল্প আয়ের সন্ধানে মাছের ভেড়ি বাড়ছে জেলায়। সেই সঙ্গে বাড়ছে ভেড়িতে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার প্রবণতা। বিদ্যুৎ দফতর অভিযান চালিয়ে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায় করছে। থানায় অভিযোগ হচ্ছে। কিন্তু অবৈধ সংযোগে বাড়ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও। প্রাণহানিতে উদ্বিগ্ন বিদ্যুৎ দফতর। মৃত্যু ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ করছে তারা।
পূর্ব মেদিনীপুরে মাছের ভেড়ি করার প্রবণতা বেড়েছে কয়েক বছরে। ভেড়িতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, বছরখানেকের মধ্যে ভেড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭-৮ জনের। দফতরের অভিযোগ, রাতের দিকে হুকিং করে পাম্প চালানোর অভিযোগ উঠছে। তা করতে গিয়েই বিদ্যুতের তারের সঙ্গে জলের সংযোগ হয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছেন মাছের ভেড়ির কর্মী বা মালিক। মাছের ভেড়ির কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, মালিকদের নির্দেশেই হুক করে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে পাম্প চালাতে বাধ্য হন তাঁরা। এ কাজে কোনও রকম সুরক্ষাবিধি মানা হয় না।
বিদ্যুৎ দফতর জানাচ্ছে, জেলায় কত ভেড়ি আছে তার কোনও হিসেব নেই। মাছের ভেড়িতে কোনও রকম বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় না। কাছের কোনও বাড়ি থেকে তার দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন ভেড়ির মালিকেরা। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অভিযান করে প্রায় এক কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করেছে বিদ্যুৎ দফতর। অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের ২৪৩টি অভিযোগ করা হয়েছে থানায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভেড়ির মালিক বলেন, "চাকরি পাইনি। সেই জন্য নিজের জমি ও অন্যের জমিতে ভেড়ি তৈরি করেছি। সকালে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে অভিযান চালানো হয় বলে রাতের দিকে হুক করে ভেড়িতে পাম্প চালায়। এই সব ঘটনার পরে আরও বেশি সুরক্ষিত ভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছি।"
বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, আরডিএসএস প্রকল্পের মাধ্যমে গোটা জেলায় প্রায় ৮৯৮৬ কিলোমিটার বিদ্যুতের তারের বদলে কেবল লাইন বসানো হবে। বর্তমানে প্রায় ৮৯৬ কিলোমিটার তারের বদলে কেবল লাইন বসানো হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে বিদ্যুৎ দফতর।
পূর্ব মেদিনীপুরের বিদ্যুৎ দফতরের রিজিয়োনাল ম্যানেজার রণজিৎ মণ্ডল বলেন, "নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের বিরুদ্ধে। মাছের ভেড়িতে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় না। যারা অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে এই সব উপভোক্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"