দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন। গেরুয়া-প্রভাবিত পুজো। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। দিলীপ মেদিনীপুরের সাংসদ, বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। শুভেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
পুজোর উদ্যোক্তাদের অনেকেই জানেন, আজ, মঙ্গলবার আসবেন শুভেন্দু। কাল, বুধবার আসবেন দিলীপ। সেই মতোই তাঁরা প্রস্তুতি সারছেন। বিজেপির এক সূত্রে অবশ্য খবর, এমনটা নাও হতে পারে। আজ, মঙ্গলবারই আসতে পারেন দিলীপ। পুজোর উদ্বোধনে শুভেন্দুর সঙ্গে একমঞ্চেই তাঁকে দেখা যেতে পারে। দলের অন্দরের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ওই দুই নেতার কাছাকাছি আসা নিয়ে জল্পনা রয়েছে জেলা বিজেপির অন্দরেও। গত বছরও জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে মেদিনীপুরে এসেছিলেন এই দু’জন। শুভেন্দু এসেছিলেন একদিনে, দিলীপ এসেছিলেন অন্যদিনে। আমন্ত্রিত বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি শহরে আসবেন কি না, এলে কবে আসবেন, তা নিয়ে অবশ্য নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি উদ্যোক্তারা। একাংশ উদ্যোক্তার অনুমান, সুকান্ত এলে, বুধবার আসতে পারেন।
বাংলায় বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, সে নিয়ে এখনই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। জল্পনা রয়েছে দলের বাইরে, ভিতরেও। এক সময়ে এই পদেই ছিলেন দিলীপ। দিন কয়েক আগেই খড়্গপুরে এসে এক মন্তব্য করে জল্পনা বাড়িয়েছেন মেদিনীপুরের সাংসদ। শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু না কি রাজ্য সভাপতি হবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেছেন, ‘‘যদি হন, তা হলে ওয়েলকাম করব আমরা।’’ বিজেপির একাংশ কর্মী অবশ্য মনে করাচ্ছেন, ইদানীং আর একে অপরের থেকে দূরে দূরে থাকেন না এই দুই নেতা। বেলদায় এক সর্বজনীন দুর্গাপুজোর উদ্বোধনেও দিলীপ-শুভেন্দুকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছিল।
শহর মেদিনীপুরে এ বার বিজেপি প্রভাবিত জগদ্ধাত্রী পুজো চারটি। মেদিনীপুরে গেরুয়া শিবিরে কোন্দল বেড়েছে। ঘটনাচক্রে, শহরে বেড়েছে জগদ্ধাত্রী পুজোও। চারটি পুজোতেই আমন্ত্রিত দিলীপ, শুভেন্দু, সুকান্ত। ‘হিন্দু যুব বাহিনী’র উদ্যোগে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে। শহরে জগদ্ধাত্রী পুজো কেন্দ্রিক জনসংযোগে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যে ভাগ বসাতেই এই পুজো শুরু বলে মনে করে একাধিক মহল। পরে ‘আমরা সবাই’-এর ব্যানারে আরেকটি পুজো শুরু হয়। সেই পুজোও হচ্ছে। এ বার নতুন সংযোজন ‘উত্তরণ’। ‘হিন্দু যুব বাহিনী’র পুজোর হোতা যুব বিজেপির জেলা সভাপতি আশীর্বাদ ভৌমিক, অরুণাভ ঘোষ প্রমুখ। এই পুজো হয় কেরানিতলার অদূরে, স্টেশন রোডের কাছে। ‘আমরা সবাই’- এর পুজো হচ্ছে গান্ধী মূর্তির সামনে। এই পুজোর হোতা শুভজিৎ রায়, অরূপ দাস প্রমুখ। শুভজিৎ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক। অরূপ জেলা বিজেপির সহ- সভাপতি। কেরানিতলায় ‘উত্তরণ’-এর পুজো হচ্ছে। পুজোর হোতা শঙ্কর গুছাইত প্রমুখ। শঙ্করও জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। এই তিনটি পুজোতেই দিলীপ, শুভেন্দু প্রমুখের যাওয়ার কথা। আরেকটি পুজোতেও তাঁদের যাওয়ার কথা। যে জগদ্ধাত্রী পুজো রমাপ্রসাদ গিরির পুজো নামেই পরিচিত। তৃণমূলে থাকাকালীন পুজো শুরু করেছিলেন রমাপ্রসাদ। পুজো হত হবিবপুরে। পরে বিজেপিতে আসেন ওই নেতা। পুজো সরে আসে খাপ্রেলবাজারে। হবিবপুর সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো, এই ব্যানারেই পুজো হত। এ বার হচ্ছে ‘গরিমা’র ব্যানারে। রমাপ্রসাদও জেলা বিজেপির সহ- সভাপতি।
‘উত্তরণ’- এর পুজোর হোতা শঙ্কর গুছাইত বলেন, ‘‘যতদূর জানি, দিলীপদা- শুভেন্দুদা দু’জনই মঙ্গলবার মেদিনীপুরে আসবেন। দু’জনই একসঙ্গে পুজোর উদ্বোধনে থাকবেন। সেই মতো প্রস্তুতি সারছিও।’’ সাংসদ দিলীপের মেদিনীপুরের নবনিযুক্ত প্রতিনিধি সোমনাথ দে বলেন, ‘‘মঙ্গলবারই দিলীপদার মেদিনীপুরে আসার কথা। পুজোর উদ্বোধনে উনি থাকবেন।’’