প্রতীকী চিত্র।
করোনা টিকাকরণে কলেজে পড়ুয়াদের জন্য শিবির হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট ছিল। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কলেজে শিবির থেকে টিকা নেয়নি অনেক পড়ুয়াই। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম দুই জেলাতেই একই ছবি। ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল, কলেজ খোলা কথা। তার আগে এই তথ্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
তবে দুই জেলা প্রশাসনেরই দাবি, বেশিরভাগ কলেজ পড়ুয়াই টিকাকরণের আওতায় চলে এসেছেন। কারণ যারা কলেজে শিবির থেকে টিকা নেয়নি, তারা আগেই অন্য শিবির কিংবা টিকাকেন্দ্র থেকে টিকা নিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু সেই তথ্য অনুযায়ী কেন পড়ুয়াদের টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হল না, প্রশ্ন সেখানেই।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৫টি কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা সবমিলিয়ে ৫৩,৪৮২। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৩,৫০০। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে মিলিয়ে ৫৬,৯৮২ জন পড়ুয়াকে টিকাকরণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। তবে শিবিরের মাধ্যমে প্রায় ৩১ হাজার পড়ুয়ার টিকাকরণ হয়েছে। মেদিনীপুর কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৪,৫০০। সেখানে প্রায় ৩ হাজার পড়ুয়ার টিকাকরণ হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। দেখা গিয়েছে, যারা কলেজের শিবির থেকে টিকা নেয়নি, তাদের অনেকেই আগে টিকা নিয়ে নিয়েছে।’’ একই দাবি কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ দুলালচন্দ্র দাসের। কমার্স কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২,১০০। কলেজের শিবির থেকে টিকা নিয়েছেন প্রায় ৯০০ জন। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়াই আগে টিকা নিয়ে নিয়েছে। তাই তারা কলেজের শিবিরে আসেনি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির থেকে টিকা নিয়েছেন প্রায় ২ হাজার পড়ুয়া। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের করোনা টিকাকরণে শিবির সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে।’’
ঝাড়গ্রাম সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিয়কুমার পান্ডা বলছেন, ‘‘এখনও যে সব পড়ুয়া প্রতিষেধক নেননি, তাঁদের তালিকা তৈরি করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করার জন্য পাঠানো হবে।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বেশিরভাগ কলেজ পড়ুয়ার টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। যাঁদের হয়নি তাঁদেরও দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে।’’
দুই জেলায় শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষকর্মীদের টিকাকরণের হার অবশ্য বেশ ভাল। ঝাড়গ্রামের জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে জেলার ৭,৬৯১ জনের মধ্যে ৬,৮৮৭ জন করোনা টিকার দু’টি ডোজ় পেয়েছেন। বাকি ৮০৪ জনের মধ্যে ৪৯২ জন প্রথম ডোজ় পেলেও এখনও দ্বিতীয় ডোজ় পাননি। ৩১২ জন এখনও প্রতিষেধকই নেননি।
স্কুল পড়ুয়াদের টিকাকরণ এখনও শুরু হয়নি। তবে তাদের আধার সংযুক্তিকরণের কাজ চলছে রাজ্য জুড়ে। ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, কাজ চলছে। মঙ্গলবার ৩০০ জন পড়ুয়ার আধার ওই পোর্টালে সংযুক্ত করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার জানান, স্কুলগুলিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আধার সংযুক্তিকরণের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।