খড়্গপুর টাউন থানা চত্বরে ধৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন বিধায়ক হিরণ। নিজস্ব চিত্র।
সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর বিকৃত ছবি শেয়ার করেছিল বিজেপির এক কর্মী। দিন দু’য়েক আগেই বিজেপির সেই কর্মীকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বিধানসভায় শপথ নেওয়ার পরে রবিবার প্রথম শহরে এসে থানায় গিয়ে বিজেপির ধৃত কর্মীর পাশে দাঁড়ালেন নব নির্বাচিত বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়।
তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিন্দর শঙ্কর নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর বিকৃত ছবি পোস্টের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক মন্তব্য সংবলিত একটি পোস্ট শেয়ারের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, সেই পোস্টে ‘ট্যাগ’ হওয়া আরও ৭জন বিজেপি কর্মী-সমর্থকের নামেও মামলা রুজু হয়েছে। ধৃত ওই বিজেপি কর্মী মাহিন্দর আপাতত পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। মাহিন্দরের স্ত্রীকে নিয়ে এ দিন থানায় যান খড়্গপুর শহরের বিধায়ক হিরণ। বিধানসভায় শপথ গ্রহণের পরে এ দিনই প্রথম তিনি শহরে আসেন। বিজেপি কর্মীর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন টাউন থানার আইসির সঙ্গে।
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে হিরণের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘অন্যায় করেছে বলেই তো পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। অথচ সারা বাংলা জুড়ে বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছে। এই জেলাতেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে। যাঁরা এই রক্তাক্ত হিংসা চালাচ্ছে তাঁদের কতজনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে?” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিল মাহিন্দর শঙ্কর বলে ওই যুবক। এটা খুব বড় অপরাধ। আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আমরা ধৃতকে হেফাজতে নিয়েছি।”
হিরণের থানায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে অন্য রাজনীতি। এক সাট্টা-জুয়া কারবারিকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে হিরণ থানায় গিয়েছিলেন বলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করছে একদল যুবক। ওই যুবকদের অধিকাংশ আবার প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। এ দিন প্রদীপও বলেন, “আমিও হিরণকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। কিন্তু উনি বিধায়ক হিসাবে প্রথম শহরে এসে আয়মার মনোজ শর্মা নামে এক সাট্টা কারবারিকে ছাড়াতে থানায় গিয়েছিলেন। এটা অপ্রত্যাশিত।” হিরণ বলেন, “মাহিন্দর শঙ্করের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ওর স্ত্রীকে নিয়েই থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু যাঁরা এভাবে সমাজমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কী পুলিশ ব্যবস্থা নেবে? সাট্টা খড়্গপুরে চলে বলে তো জানিই না!”