প্রতীকী ছবি।
ভোটের আগে ঝাড়গ্রাম জেলায় শিল্পীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে তৃণমূলের সাংস্কৃতিক সংগঠন। যা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস শিল্পী সমন্বয় সংস্থা নামে ওই সংগঠন তৈরির মূল উদ্যোক্তা হলেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো। গত রবিবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে মূলত তাঁর উদ্যোগেই ওই সংগঠনের প্রথম কনভেনশনও হয়েছে। সেখানে সংগঠনের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেনকে। সভাপতি হয়েছেন অজিত নিজে। চারজন আহ্বায়ক হয়েছেন ঝুমুর সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো, অঙ্কনশিল্পী দেবজিৎ মান্না, যন্ত্রশিল্পী সুরজিৎ দাস, নৃত্যশিক্ষিকা ও নৃত্যশিল্পী কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই সংগঠনের নামে আবেদনপত্র ছাপিয়ে জেলা জুড়ে ওই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ অভিযানও শুরু হয়েছে। তাতে অস্বস্তির কাঁটাও বিঁধছে শাসক-শিবিরে। কারণ শিল্পীভাতা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লালগড়, সাঁকরাইল, বেলপাহাড়ির মতো বিভিন্ন এলাকায় একটি চক্র ওই ফর্ম বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এমন অভিযোগ পান তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। ছত্রধর বলেন, ‘‘স্থানীয় সূত্রে এ রকম অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। তারপরে আর ফর্ম বিক্রির অভিযোগ পাইনি।’’
শুধু তাই নয়, জেলা তৃণমূলের একাংশের আবার দাবি, দলের জেলা কমিটিতে কোনও আলোচনা না করেই ওই সংগঠন গড়েছেন অজিত। যদিও অজিতের দাবি, দুঃস্থ শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের সদস্য হওয়ার জন্য ফর্ম বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগকে বানচাল করার জন্য বিরোধীরা ভুয়ো অভিযোগ করছে। তিনি বলেন, ‘‘বিরবাহাদি (সরেন) জেলা সভাপতি থাকাকালীন ওই জেলা কমিটিতে আলোচনা করে শিল্পী সমন্বয় সংস্থা গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।’’ বিরবাহার দাবি, ‘‘এটা শিল্পীদের ইউনিয়ন। আর কিছু নয়।’’
অজিতের এই উদ্যোগ অবশ্য শুরু হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগে। লকডাউনের সময়ে শিল্পী সমন্বয় সংস্থার নামে দুঃস্থ শিল্পীদের ত্রাণ সাহায্য, গাছ লাগানো, রক্তদান শিবিরের মতো নানা সামাজিক কর্মসূচি করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সম্প্রতি সেই সংস্থার আগেই ‘ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস’ শব্দ চারটি বসেছে। যা নিয়ে শিল্পীদের একাংশও ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সংগঠনের একাধিক সদস্য বলেন, ‘‘শিল্পী সংগঠনে এভাবে রাজনীতিকরণ না হলেই ভাল হতো। আগে শুধু শিল্পী সমন্বয় সংস্থা নামটা দেখেই যুক্ত হয়েছিলাম।’’
ঝাড়গ্রামের জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুও বলেন, ‘‘ওই সংগঠনের বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নেব।’’