—প্রতীকী ছবি।
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরে বুধবার বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এমন পরিস্থিতিতে শুভেন্দু ‘ঘনিষ্ঠ’ জেলা তৃণমূলের ‘বিদ্রোহী’ নেতাদের অবস্থান নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।
জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ নেতাদের অধিকাংশ খড়্গপুর মহকুমার জনপ্রতিনিধি। তাঁদের মতে, এখন দলত্যাগের ইঙ্গিত কার্যত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আগামী শনিবার জেলা সদর মেদিনীপুরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভায় শুভেন্দু থাকতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। এমনকি শুভেন্দু ছাড়াও তাঁর একঝাঁক অনুগামী নেতা-কর্মীরা থাকতে পারেন বলেও খবর। যদিও এই বিষয় নিয়ে এখনও বিজেপির কাছে কোনও খবর নেই বলে জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতা তথা রাঢ়বঙ্গের মুখপাত্র তুষার মুখোপাধ্যায়। তবে তৃণমূলের কেউ ওই সভায় এসে যোগদান করলে, তাঁরা স্বাগত জানাবেন বলেও জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন তিনি। অবশ্য দলের বিরুদ্ধে সরব হলেও তাঁরা দলত্যাগ করবেন কি না, তা নিয়ে এখনই প্রকাশ্য মুখ খুলতে চাইছেন না শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতারা। তবে কেউ বলছেন দলে থেকে প্রতিবাদ করে পথ বদলের কথা। বুধবার ৭২ ঘণ্টা হাতে সময় থাকার মতো ইঙ্গিতপূর্ণ কথাও শোনা গিয়েছে অনেক নেতার গলায়।
খড়্গপুর মহকুমার সবংয়ের নেতা তথা জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি এখন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ইতিমধ্যেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি তৃণমূল নেত্রীর জনসভায় দেখা যায়নি অমূল্যকে। তিনি বলেন, “দল আমার রাজনৈতিক সমস্ত ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। মিথ্যা মামলা, নিরাপত্তা রক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে। দলের ক্ষমতা এখন কাগুজে বাঘদের হাতে। এতে আমি নিশ্চয় সন্তুষ্ট নই। তাই দলে থাকব কি না ভাবতে হবে। এখনও তো ৭২ ঘণ্টা বাকি।” দিনকয়েক আগে শুভেন্দু বন্দনা করা ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের জেলা নেতা অলোক আচার্যও জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন। অলোক বলেন, “দলে থেকে দলের অন্যায়ে প্রতিবাদ করছি। কিন্তু বিচার পাচ্ছি না। এ ভাবে যদি দল চলতে থাকে, তবে নিশ্চয় আমাদেরও ভাবতে হবে।”
এই শহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি জহরলাল পালও মাস কয়েক ধরেই দলের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছিলেন না। শুভেন্দু মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পরে তাকে সমর্থন জানিয়ে দলের জেলা নেতৃত্ব থেকে তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। এখন দলত্যাগের প্রশ্নে জহরলাল পাল বলছেন, “দলের কাছ থেকে এখন বিচার পাইনি। দলের কেউ যোগাযোগ করেনি। শেষ পর্যন্ত দেখছি!” দাঁতন থেকে নির্বাচিত জেলা কর্মাধ্যক্ষ রমা গিরি এখন ‘দাদার অনুগামী’ হয়ে দলে কোণঠাসা। রমার কথায়, “দলই তো আমাদের দূরে করে দিয়েছে। কোনও যোগাযোগ নেই দলের সঙ্গে। দাদার পথেই হাঁটছি। দাদা যে নির্দেশ দেবেন, সেটাই হবে।”