প্রতিপালন: বিশেষ যত্নে বেড়ে উঠছে ছাগলছানারা । নিজস্ব চিত্র
স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার ওড়িশা সীমানাবর্তী নয়াগ্রামে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ উদ্যান। স্বনির্ভর গোষ্ঠী উদ্যান (এসএইচজি পার্ক)-এ রয়েছে হাঁস-মুরগি-ছাগল পালনের জন্য চারণভূমি, মাছ চাষের জন্য পুকুর। মাস ছ’য়েক আগে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ। নয়াগ্রামের বিডিও বিজয় সরকার বলেন, “স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে স্বসহায়ক দলগুলিকে নিয়ে বড় আকারের পার্কটিকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।”
নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য প্রাথমিক ভাবে খরচ হচ্ছে ৪০ লক্ষ টাকা। নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ি পঞ্চায়েতের নোয়াসাই গ্রামে প্রায় ১৮ বিঘা জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্ক। এর মধ্যে ৬ বিঘা জমিতে হাঁস-মুরগি-ছাগল পালনের জন্য চারণভূমি ও খাদ্যশস্যের চাষ করা হচ্ছে। রয়েছে মাছ চাষের জন্য একটি পুকুরও। প্রশাসনের উদ্যোগে পার্কে একাধিক শেডও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ১৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ভাগাভাগি করে খামারে হাঁস, মুরগি ও ছাগল পালন করছেন। এ ছাড়া বিশেষ যন্ত্রে শালপাতার থালা তৈরির কাজও করা হচ্ছে।
জঙ্গল নির্ভর প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে চাষাবাদের মরসুম বাদে বাকি সময়ে জঙ্গলের ডালপাতা, কিংবা শালপাতা কুড়িয়ে সে সব হাটে বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন আদিবাসী-মূলবাসীরা। ওই সব পরিবারের জন্য সারা বছর বিকল্প রোজগারের বন্দোবস্ত করতে চায় প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সুফল পেতে শুরু করেছে উপভোক্তা পরিবারগুলি। প্রতিটি গোষ্ঠীতে বিভিন্ন পরিবারের গড়ে দশ জন করে সদস্য আছেন। মোট উপকৃত পরিবারের সংখ্যা ১২০টি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে হাঁসের ছানা ও মুরগি ছানা দেওয়া হয়েছিল। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকে দেওয়া হয়েছে ২৫টি শালপাতার থালা তৈরির যন্ত্র।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সুরভি সিংহ, আকুলবালা সিংহ-রা বলছেন, “বাড়িতে আগে হাতেগোনা হাঁস, মুরগি, ছাগল পালন করতাম। এখন কয়েক হাজার হাঁস-মুরগি যৌথ ভাবে পালন করে প্রত্যেকেই বেশি লাভের আশায় রয়েছি।” প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী কয়েকমাস প্রশাসনের উদ্যোগে উপভোক্তা গোষ্ঠীগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। পার্কটি পুরোদস্তুর চালু হয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করলে তখন গোষ্ঠীর সদস্যরাই পার্কটি পরিচালনা করবেন।