শুক্রবার রাতে শিল্পীদের সঙ্গে ক্লাব সদস্যদের বচসা। —নিজস্ব চিত্র।
রাতভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের এক ক্লাবে। সেখানে নাচের অনুষ্ঠানের জন্য অন্য জায়গা থেকে শিল্পীরা এসেছিলেন। ছিলেন মহিলা শিল্পীও। অভিযোগ, রাতে মহিলা শিল্পীদের স্বল্প পোশাকে নাচার জন্য জোরাজুরি করেন ক্লাবের সদস্যেরা। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলা শিল্পীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই দু’জন ক্লাব সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা অনুসন্ধান চলছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মামলা রুজু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে ক্লাবের তরফে। ক্লাব সদস্যদের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অশ্লীল নাচের দাবি করা হয়নি। নাচের জন্য নির্ধারিত সময়ের কম অনুষ্ঠান করার পাশাপাশি টাকাপয়সা নিয়েও সমস্যা হয়। এই নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা চলার সময় নাচের দলের হামলায় ক্লাবের এক সদস্যের পা ভেঙেছে। তাঁকে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল নাচের আসরের কথা বলে চালাচ্ছেন নাচের শিল্পীরা।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে নন্দকুমার এলাকার একটি ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এলাকার বাইরে থেকে শিল্পী আনা হয়েছিল সেখানে। অভিযোগ, রাতে ক্লাবের কয়েক জন সদস্য মহিলা শিল্পীদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করতে শুরু করেন। মহিলা শিল্পীর অভিযোগ, সব মিলিয়ে দু’ঘণ্টা নাচের জন্য চুক্তি হয়েছিল আয়োজকদের সঙ্গে। কিন্তু তাঁদের জোর করে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা থাকতে বাধ্য করা হয়। শেষের দিকে তাঁদের অল্প পোশাকে অশ্লীল নাচের জন্য জোরাজুরি শুরু করেন কয়েক জন। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। তার পরই শিল্পীদের মারধর শুরু করেন ক্লাবের সদস্যেরা। বাদ যাননি মহিলারাও। মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ক্লাব সদস্যেরা শিল্পীদের আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। পরে শিল্পীরা কোনও রকমে তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার কথা জানান। তার পর সংগঠনের লোকেরা নন্দকুমার থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে শিল্পীদের উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ক্লাবের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জাননো হয়েছে।
এক মহিলা শিল্পীর কথায়, “নন্দকুমারের ঠেকুয়া বাজারের একটি ক্লাব আমাদের নাচের জন্য বুক করে। সন্ধ্যা ৭টায় আমরা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে যাই এবং টানা তিন ঘণ্টা আমরা অনুষ্ঠান করি। এর পর তাঁদের অনুরোধে আরও বেশ খানিকটা সময় আমরা নাচগান করেছিলাম। এর পরেই একাধিক ক্লাব সদস্য আমাদের অশ্লীল নাচের জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। আমরা প্রতিবাদ করতেই গ্রিন রুমে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।