দু’মাসে উৎপাদন হয়েছে ২৩৪৪ ইউনিট বিদ্যুৎ। খরচ হয়েছে ৭৭৫ ইউনিট। বিষয়টা এতদিন ছিল পরীক্ষামূলক। এ বার দাসপুর পাঁচবেড়িয়া হাইস্কুলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হল সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করে বলেন, “প্রকৃতিবান্ধব সৌরশক্তি ব্যবহার হলে স্কুল ও সরকারি বহু দফতরে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিলের টাকাও বাঁচবে।”
নতুন বছরের গোড়াতেই সরকারি খরচে পাঁচবেড়িয়া হাইস্কুলে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হয়েছিল। পরীক্ষামূলক এতদিন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনও হচ্ছিল। প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার মাইতি বলেন, “দু’মাসেই স্কুলে ২৩৪৪ ইউনিট (দু’মাসে) বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। স্কুলের খরচ হয়েছে ৭৭৫ ইউনিট। ফলে এ মাসের বিল দিতে হবে না।”
শুধু পাঁচবেড়িয়া নয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই সাতটি স্কুলে এই সৌর আলোর ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আরও ৪০টি সোলার পাওয়ার প্লান্ট বসানো হবে। জেলার বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “স্কুল গুলিতে এই সৌর প্লান্ট বসিয়ে আলো জ্বালানো হবে। এর ব্যবহারে ফি বছর স্কুল গুলিতে দেড়-দু’লক্ষ টাকা স্কুলের বাঁচবে। ওই টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলের উন্নয়নে খরচ করতে পারবে।’’ পাশাপাশি উৎপাদন বেশি হলে তা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা গ্রিডের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ সাধারণ লাইনে পাঠিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে রাজ্য সরকার অন্য রাজ্যকে বিদ্যুৎ বিক্রি করতেও পাবে।
জেলায় পাঁচবেড়িয়া হাইস্কুল-সহ মোট সাতটি স্কুলে সৌরশক্তির সাহায্যে আলো, পাখা চলছে। চলতি আর্থিক বছরেই আরও ৪০টি স্কুলে নতুন করে সৌর বিদ্যুতের প্লান্ট বসানো হবে। শুধু স্কুল গুলিতেই নয়, সরকারি বিভিন্ন দফতর এবং হাসপাতালেও এ বার সৌরশক্তির সাহায্যে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। অমূল্যবাবুর দাবি, “জেলার ৯৬ টি সরকারি দফতরে (হাসপাতাল সহ) সোলার প্লেট বসানোর অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে।”
রাজ্যের পুনর্নবীকরণ শক্তি উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে এই পদ্ধতিতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। স্কুলের ছাদ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। খরচ পড়ছে ১০ লক্ষ টাকা। তবে সমস্যা হল, এ গুলিতে বিদ্যুৎ জমা করে রাখার ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎ না থাকলে সোলার সিস্টেমও চলবে না। ফলে স্কুলেও তখন বিদ্যুৎ থাকবে না। ওই পদ্ধতিতে উৎপাদন হওয়া বিদ্যুৎ গ্রিডের মাধ্যমে সাধারণ তারে তা পৌঁছে যাবে। সোনাখালি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের স্টেশন ম্যানেজার রনি মিত্র বলেন, “এর ব্যবহার বাড়লে ট্রান্সফর্মারগুলির চাপ কমবে। ভোল্টেজ স্বাভাবিক থাকবে।”