চলছে নাটকের মহড়া। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
গানের সুরে নাচছে মশার দল!
স্কুলপড়ুয়া তোর্সা পাহাড়ি, প্রিয়ম রথ, অনির্বাণ দাসরা মশা সেজে হাতের আঙুলের প্রতীকী হুল নাড়িয়ে সচেতন করবে আমজনতাকে। বলবে, মশার বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী একাংশ নাগরিক। কী ভাবে? সেটাও পথ নাটিকার মাধ্যমে অভিনয় করে দেখাবে তারা।
মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে ঝাড়গ্রাম শহরবাসীকে সচেতন করতে এমনই উদ্যোগ নিয়েছে ‘এসো নাটক করি’ সংস্থাটি। সংস্থার পরিচালক নাট্যকর্মী অভিষেক বর্মনের লেখা ‘হও সচেতন’ নাটকে মূক ও বধির তরুণের ভূমিকায় রয়েছেন তিনিও। অভিযেক জানান, একাংশ শহরবাসীর দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস পরির্তনের জন্য অনুরোধ জানানো হবে নাটকে। যেমন, মশার সাজে তোর্সারা জানাবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে প্রজন্মান্তরে ডেঙ্গি মশার বংশবৃদ্ধির জন্য দায়ী মানুষ। বৃষ্টির জমা জলে বেড়ে ওঠে ডেঙ্গির মশা। অথচ সরকারি হাসপাতালের কাছে রাস্তার ধারে পড়ে থাকে অজস্র ডাবের খোলা। খোলার ভিতরে বৃষ্টির জমা জলে জন্মায় মশা। ডেঙ্গি নিয়ে নানা দাওয়াই দেন যে চিকিৎসক, তিনিই কাকভোরে নর্দমায় জঞ্জাল ফেলেন। উচ্চশিক্ষিত অধ্যাপক মশাই সেমিনারে গিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন, অথচ তিনিই ঘুমনোর সময় মশারি টাঙাতে ভুলে যান। অভিষেকের পথ-নাটকের রক্তচোষা মশারা যেন
‘চোখে আঙুল দাদা’।
কয়েকদিন ধরে ঝাড়গ্রামের বলাকা মঞ্চে নাটকটির মহড়া চলছে। সবাক অভিনেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করছেন পাঁচ নির্বাক অভিনেতাও। মোবাইল ফোন মেরামতির কর্মী অতনু জানা, কম্পিউটার সংস্থার ডিটিপি কর্মী শুভঙ্কর পাল, চা দোকানের কর্মী সোনাইনারায়ণ দেব, রবীন্দ্রমুক্ত বিদ্যালয়ের পড়ুয়া গৌতম আগুয়ান ও সুমন দে-রা সকলেই মূক ও বধির।
কিন্তু হঠাৎ এমন উদ্যোগ কেন?
অভিষেকের জবাব, ‘‘জঙ্গলমহলে এক মহিলা-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। প্রচার চললেও একাংশ নাগরিক সচেতন হচ্ছেন না। নিতান্তই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই নাটকের মাধ্যমে সচেতন করতে চাইছি।’’