শঙ্করআড়া খালের উপরে স্লুইস গেট। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের জেরে আয় কমেছে রাজ্যের। এই পরস্থিতিতে এক কোটি টাকার বেশি খরচের কোনও প্রকল্পের কাজ করতে হলে সেচ দফতরকে অর্থ দফতরের অনুমোদন নিতে হবে বলে সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য। নির্দেশিকার গেরোয় থমকে তমলুক মহকুমার একাধিক স্লুইস গেট সংস্কারের কাজ।
তমলুক মহকুমার কোলাঘাট, তমলুক এবং শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বয়ে গিয়েছে দেহাটি, দেনান, বাঁপুর, মেচেদা, গঙ্গাখালি ও শঙ্করআড়া খাল। খালগুলি মিশেছে রূপনারায়ণে। এলাকার সেচ, নিকাশি ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে খালগুলির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই খালগুলির বেশ কয়েকটি স্লুইস সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলা শেষ দফতর ওই কাজের জন্য তিন কোটি ৬৯ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয় রাজ্যে সেচ দফতরে। লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় কোনও রকম অর্থ বরাদ্দ হয়নি। আর এখন জারি হয়েছে নয়া নির্দেশিকা।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, লকডাউনের আগে পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকার কোনও প্রকল্পের কাজ করতে গেলে শুধুমাত্র সেচ দফতরের অনুমোদন হলেই চলত। অর্থ দফতরের অনুমোদন দরকার ছিল না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সেচ দফতর সূত্রে খবর, অনুমোদনের গেরোয় পূর্বের প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ মঞ্জুর থমকে গিয়েছে। ফলে চলতি বর্ষা মরসুমে আর কোনও ভাবে দুর্বল স্লুইসগুলি মেরামত করা যাবে না। সেক্ষেত্রে বেশি বৃষ্টি হলে দুর্বল ওই স্লুইস গেটগুলি নিয়ে সেচ দফতরের চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অর্থ দফতরের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী ১ কোটি টাকার বেশি প্রকল্প হলে অর্থ দফতরের অনুমোদন দরকার। কয়েক মাস আগে তমলুক মহকুমার বেশ কিছু খালের একাধিক স্লুইস সংস্কারের জন্য আমরা যে প্রকল্প জমা দিয়েছিলাম, অর্থ দফতর এখনও তা মঞ্জুর করেনি। তাই এই মরসুমে আর স্লুইসগুলি সংস্কার করা যাবে না। তবে স্লুইসগুলির ছোটখাটো যান্ত্রিক ইতিমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। স্লুইস দিয়ে জল ঢোকা বা বেরনোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। অর্থ বরাদ্দ হলে আমরা স্লুইসগুলির পরিকাঠামোগত সংস্কার করতে পারতাম।"
স্লুইস গেটগুলি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়ায় চিন্তুত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা প্রতিরোধ কমিটি। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘বর্ষার আগে দুর্বল স্লুইসগুলি সংস্কার করা হলে ভাল হত। বিশেষ পরিস্থিতিতে অর্থ দফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকলে বড় কোনও বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। অর্থ দফতরের উচিত সেচ দফতরের নিজস্ব বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো।’’