রোগমুক্তির কামনায় মাতা পুজো খড়্গপুরে

বসন্তে ছড়ায় এমন নানা রোগ থেকে মুক্তি কামনায় অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু সম্প্রদায়ের মানুষেরা শীতলার আরাধনা করেন। সেই রীতি মেনে শুক্রবারও সকাল থেকে সোলাপুরী মাতার পুজো ঘিরে মেতে উঠল খড়্গপুর। শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এ দিন পুজোর সূচনা হয়। আগামী ৯দিন ধরে চলবে এই পুজো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ১২:১০
Share:

জাঁক: দেবী মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা। নিজস্ব চিত্র

বসন্তে ছড়ায় এমন নানা রোগ থেকে মুক্তি কামনায় অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু সম্প্রদায়ের মানুষেরা শীতলার আরাধনা করেন। সেই রীতি মেনে শুক্রবারও সকাল থেকে সোলাপুরী মাতার পুজো ঘিরে মেতে উঠল খড়্গপুর। শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এ দিন পুজোর সূচনা হয়। আগামী ৯দিন ধরে চলবে এই পুজো।

Advertisement

দীর্ঘ ১০৬ বছর ধরে রেলশহরে সোলাপুরী মাতার আরাধনা করে আসছেন তেলুগু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এখন শহরের বাঙালিরাও এই পুজো আপন করে নিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু নববর্ষ ‘উগাদি’র আগে অমাবস্যায় নুকালাম্মারূপী শীতলা পুজোয় মাতেন তেলুগুরা। তারপরে গ্রামে গ্রামে ঘোরানো হয় দেবী মূর্তিকে।

সেই রীতি মেনে ১৯১১ সালে খড়্গপুরের ওল্ড সেটলমেন্টের বাসিন্দা পি আদিনারায়ণও শহরে সোলাপুরী মাতার পুজো চালু করেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মতো একই রীতিতে পুজো হলেও এখানে দেবীর নাম আলাদা। প্রতি বছর পুজোর দিন সকালে শহরের খরিদার সোলাপুরী মাতা মন্দিরে পুজো দিয়ে ফুল নিয়ে আসেন পি আদিনারায়ণের ছেলে পি পার্থসারথি। এরপর ৭ নম্বর রের কলোনি এলাকায় মাতা মূর্তি তৈরি করা হয়। হাঁড়ির উপর কাঁচা হলুদ মাখিয়ে তার উপর সিঁদুর দিয়ে দেবীর চোখ, মুখ আঁকা হয়। তারপর সেই দেবী মূর্তি মাথায় নিয়ে বের হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে মাতা মূর্তি রাখা হয় খরিদার মন্দিরে। সেখানেই ন’দিন ধরে চলে দেবীর পুজোপাঠ। ন’দিন পরে ফের শোভাযাত্রা করে হয় দেবীর বিসর্জন। শোভাযাত্রায় কে দেবী মূর্তি মাথায় নিয়ে যাবে, তা লটারি করে নির্বাচন করা হয়। সাধারণত লটারি করে তিন জন ভক্তকে নির্বাচন করা হয়, তাঁরাই মাথায় দেবী মূর্তি নিয়ে হাঁটেন।

Advertisement

প্রথা মতো শুক্রবার শহরের ৭ নম্বর রেল কলোনি থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে গোলবাজার, পোর্টারখোলি, ওল্ড সেটলমেন্ট, বড়বাতি, খরিদা এলাকা পরিক্রমা করে। পি পার্থসারথি বলেন, “বাবার দেখানো নিয়ম মেনেই দেবীর মূর্তি তৈরি করি। এমনকী যাঁরা এই মূর্তি কাঁধে নিয়ে যান তাঁদের ধুতিও কাঁচা হলুদ গোলা জলে ডুবিয়ে রং করা হয়। এখন শহরের সকলেই এই পুজোয় সামিল হন।”

মাতা মন্দির কমিটির সম্পাদক এস সত্যনারায়ণ বলেন, “বহু বছর ধরে এই পুজো হচ্ছে। একমাত্র খড়্গপুরেই সোলাপুরী মাতা পুজোর চল রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে অন্য নামে দেবী পূজিতা হন। এখন শহরের বাঙালি-সহ অন্য জনজাতির লোকরাও পুজোয় সামিল হচ্ছেন দেখে ভাল লাগে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement