বিবেকানন্দ পল্লিতে। নিজস্ব চিত্র
ফের ২০১৮-র অগস্টের পুনরাবৃত্তি! মঙ্গলবার রাতের প্রবল বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে গেল ঝাড়গ্রাম শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা
পুরবাসীর একাংশের অভিযোগ, পরিকল্পনাবিহীন নিকাশির জন্যই এমন দশা। ২০১৮ সালের ৬ অগস্ট প্রবল বৃষ্টিতে শহরের বেশির ভাগ এলাকা জলে ডুবে গিয়েছিল। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮ টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম শহর ও লাগোয়া এলাকায় পর্যায়ক্রমে মোট ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই শহরের পাঁচমাথা মোড়ে মেন রোডের উপর দিয়ে জল বইতে থাকে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দেবেন্দ্রমোহন হল গলির কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকে যায়। রাত বাড়লে বৃষ্টিও বাড়তে থাকে। ততক্ষণে ১ নম্বর ওয়ার্ডের শিরিষচক, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাছুরডোবা নামো পাড়া, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রেল লাইন বস্তি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নৃপেনপল্লি, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরবিএম হস্টেলের পিছন পাড়া, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বলাকা মঞ্চ লাগোয়া এলাকার বাড়ি গুলিতে জল ঢুকে গিয়ে থই থই অবস্থা হয়ে যায়।
বুধবার সকালে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো জলবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেন। পুরসভার তরফে বিবেকাননন্দ পল্লি সহ কয়েক জায়গায় শুকনো খাবার ও ত্রিপল দেওয়া হয়। পুরসভার তরফে পাম্প এনে বিবেকানন্দ পল্লি এলাকার জল বের করার ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার সকালে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বলাকা মঞ্চ লাগোয়া অভিজাত এলাকায় গিয়ে দেখা গেল অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা অচর্না দে-র বাড়ির একতলায় জল থই থই করছে। অবসরপ্রাপ্ত ডাকবিভাগের কর্মী বিমল প্রতিহার সপরিবারে বালতি নিয়ে বাড়ির উঠোনের জল বের করছিলেন। শহরবাসীর অভিযোগ, ১৯৮২ সাল থেকে টানা ৩১ বছর পুরবোর্ডের ক্ষমতায় ছিল বামেরা। নিকাশির সমস্যা মেটাতে মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করার আশ্বাস বারে বারে দেওয়া হলেও কিছুই হয়নি। ২০১৩-২০১৮ তৃণমূলের পুরবোর্ড পরিকল্পনাবিহীন ভাবে কিছু পাকা নর্দমা বানালেও মূল সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করা হয়নি।
জেলার ২৮টি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোপীবল্লভপুর, জামবনি, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল সহ জেলার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে ৯০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার ফলে সুবর্ণরেখায় জল বেড়েছে। কংসাবতী ও ডুলুং নদীতেও জল বেড়েছে। ডুলুং নদীর জল বেড়ে গিয়ে জামবনির শাবলমারা এলাকায় কজওয়ের রাস্তার মাটি ধুয়ে গিয়ে চিল্কিগড় থেকে চিচিড়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।