ফাইল চিত্র।
স্কুল খুলেছে মাস খানেক আগে। গত কয়েক মাসে বাজারের বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রীর দাবি। কিন্তু স্কুল পড়ুয়াদের মিড-মিলের সরকারি বরাদ্দ বাড়েনি। ফলে খাদ্য সামগ্রী জোগান দিতে হিমশিমখাচ্ছে স্কুলগুলি।
পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের খাবার দেওয়ার জন্য সর্বশেষ সরকারি অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছিল ২০২০ সালের এপ্রিলে। প্রাথমিক স্কুলগুলির প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল বাবদ মাথা পিছু বরাদ্দ করা হয় ৪ টাকা ৯৭ পয়সা। আপার প্রাইমারি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাথা পিছু বরাদ্দ করা হয় ৭ টাকা ৪৫ পয়সা। সে সময় করোনা পরিস্থিতির কারণে স্কুল বন্ধ ছিল। ফলে বরাদ্দ অর্থে কাঁচা সামগ্রী বণ্টন করা হত পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে ফের সমস্ত স্কুলের ক্লাস চালু হয়ছে। ফলে মিড-ডে মিলের রান্না করা খাবার দিতে হচ্ছে। কিন্তু প্রায় ২ বছরের বেশি সময় পার হলেও মিড–ডে মিলের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি না হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছেবলে অভিযোগ।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, গত দু’বছরে ডাল, তেল ও ডিম-সহ মিড-ডে মিলের খাবারের বিভিন্ন সামগ্রীর দাম অনেকটাই বেড়েছে। তাই এখন রান্না করা খাবার দিতে অর্থ সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ ভৌমিক জানাচ্ছেন, ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে মুসুর ডালের দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৯০ টাকা, সর্ষের তেলের দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ১১০ টাকা, ডিমের দাম ৫ টাকা। কিন্তু বর্তমানে প্রতি কিলোগ্রাম মুসুর ডালের দাম ১২০ টাকা হয়েছে, সর্ষের তেল হয়েছে ১৮০ টাকা আর প্রতিটি ডিমের দাম বেড়ে ছ’টাকা হয়েছে। এছাড়া, রান্নার গ্যাসের দামও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সরকারি বরাদ্দবৃদ্ধি পায়নি।
অরূপ বলছেন, ‘‘মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সংগঠনের তরফে জেলাপ্রশাসন ও জেলা শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রাথমিক পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল বাবদ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে মাথা পিছু কমপক্ষে ১০ টাকা করা হোক।’’ বঙ্গীয় প্রাথমিক প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সৌমিত্র পট্টনায়েক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের রান্না করা মিড-ডে মিল খাওয়ানোর জন্য সরকারি বরাদ্দ যথেষ্ট নয়। তাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন সামগ্রীর বাজার দর বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।’’ একই দাবি নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অশোক দাসেরও।
শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি যে নায্য, তা মানছে শিক্ষা দফতরও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির শিক্ষকদের দাবি রয়েছে। এই দাবি যুক্তি সম্মত। তবে মিড-ডে মিলের অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের দ্রুত বিবেচনা করা উচিত।’’