পাইপ ফেটে বিপত্তি

জলের আকাল খড়্গপুরে

গরম পড়তেই জলের আকাল। পাইপ ফেটে যাওয়ায় রেলশহরের কয়েকটি এলাকায় জলসরবরাহে বিঘ্নিত হল রবিবার। আর এই ঘটনায় পাইপ লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে উঠল প্রশ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৮
Share:

গরম পড়তেই জলের আকাল। পাইপ ফেটে যাওয়ায় রেলশহরের কয়েকটি এলাকায় জলসরবরাহে বিঘ্নিত হল রবিবার। আর এই ঘটনায় পাইপ লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে উঠল প্রশ্ন।

Advertisement

ফি গরমে জলকষ্টে ভোগেন খড়্গপুরবাসী। শহরের একটি অংশে কংসাবতী নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হয়। বাকি অংশে ভূ-গর্ভস্থ জল পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি যায়। জল সমস্যা কাটাতে শহরে ৮৭ কোটি ব্যয়ে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তবে ছ’বছরেও কাজ শেষ হয়নি।

কাঁসাই নদী থেকে জল তুলে কেশাপালে তা পরিস্রুত করা হয়। পরে সেই জল পাইপলাইনের মাধ্যমে যায় ঝরিয়ার ওভারডেহড ট্যাঙ্কে। এখান থেকে জল শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৫টি ট্যাঙ্কে যায়। ওই ছোট ট্যাঙ্কগুলি থেকে পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল যায়। তবে শহরের যে সমস্ত অংশে নদীর জলত্তোলন প্রকল্পের জল যায় না, সেখানে ভূ-গর্ভস্থ জল পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।

Advertisement

সমস্যা কোথায়? রবিবার ঝরিয়া থেকে রাজগ্রাম ও মালঞ্চ ট্যাঙ্কের পাইপলাইনে ফাটল দেখা যায়। রাজগ্রামে পাইপলাইনের জল পাম্পের মাধ্যমে ওভারহেড ট্যাঙ্কে জমা হয়। ট্যাঙ্ক থেকে পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল যায়। যদিও ঝরিয়া থেকে আসা জল মালঞ্চয় প্রথমে রিজার্ভারে জমা হয়। রিজার্ভার থেকে জল পাম্পের মাধ্যমে ওভারহে়ড ট্যাঙ্কে তোলা হয়। সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ হয়। রবিবার পাইপ ফেটে যাওয়ায় জলের চাপ কম ছিল। ফলে রাজগ্রামে ওভারহেড ট্যাঙ্কই ভর্তি করা যায়নি। ফলে বিঘ্নিত হয় জল সরবরাহও। সমস্যায় পড়েন সুভাষপল্লি, খরিদা, রাজগ্রাম, শ্রীকৃষ্ণপুর, নালিপাড়া, বাঙালিপাড়া, তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জয়শ্রী পাল বলেন, ‘‘জলসরবরাহ একেবারে বন্ধ ছিল তা নয়। ট্যাঙ্ক ভর্তি করতে সমস্যা হওয়ায় পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা যায়নি। পাইপ মেরামতির কাজ চলছে। সোমবার সকাল থেকে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায়ই জল সরবরাহে সমস্যা হয়। পাইপ লাইনে জলের চাপ কম থাকায় মালঞ্চতে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা যায়নি। ফলে তীব্র গরমে সমস্যায় পড়়েন মালঞ্চ রোড, ভগবানপুর, সুষমাপল্লি, ঢেকিয়ার মতো এলাকা। মালঞ্চর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী প্রশান্ত দাস বলেন, “সকালে মিনিট কুড়ি কল দিয়ে সুতোর মতো জল পড়ে। তার পরে আর জল আসেনি।’’ তিনি বলছেন, ‘‘প্রায়ই নানা সমস্যার কারণে জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। কখনও পাইপ ফেটে যায়, আবার কখনও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য পাম্প না চলায় সমস্যা তৈরি হয়। এ সব কথা কাকে বলব।’’

এ নিয়ে পুরসভার জল বিষয়ক পুর-পারিষদ তৈমুর আলি খান বলেন, “ঝরিয়া থেকে রাজগ্রামের পাইপ লাইনের একটি অংশ ফেটে যাওয়ায় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়। পাইপ মেরামতির কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।” যদিও পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি, “শহরে জলের কোনও সমস্যা নেই। যা সমস্যা ছিল তাও সমাধান হয়ে গিয়েছে। শহরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement