গরম পড়তেই সবংয়ে জল সঙ্কটের আশঙ্কা

ক্রমশ বাড়ছে এলাকা। বড় বড় বা়ড়িতে ঢেকে যাচ্ছে মফস্সলও। অথচ ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও পান না বাসিন্দারা। সবং ব্লকের শহর এলাকা বলে পরিচিত তেমাথানির বাসিন্দারাও তেমন অভিযোগ তুলছেন। পানীয় জলের সমস্যায় ধুঁকছে গোটা এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সবং শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৮
Share:

ক্রমশ বাড়ছে এলাকা। বড় বড় বা়ড়িতে ঢেকে যাচ্ছে মফস্সলও। অথচ ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও পান না বাসিন্দারা। সবং ব্লকের শহর এলাকা বলে পরিচিত তেমাথানির বাসিন্দারাও তেমন অভিযোগ তুলছেন। পানীয় জলের সমস্যায় ধুঁকছে গোটা এলাকা।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরেই দেভোগ পঞ্চায়েতের এই এলাকায় বসতি বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তেমাথানি মোড় ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলেও দ্রুত বাড়ছে পাকা বাড়ি সংখ্যা। যাতায়াতের সুবিধার জন্য ব্লকের অন্য প্রান্ত থেকে বাসিন্দারা চলে আসতে চাইছেন এই অঞ্চলে। পাল্লা দিয়ে গজিয়ে উঠছে দোকানপাট। প্রয়োজন বাড়ছে জলের।

অভিযোগ, তেমাথানি মোড় ও আশপাশের রাস্তায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের বেশ কয়েকটি কল ছিল। কিন্তু এখন আর সেখানে পর্যাপ্ত জলও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বসতি এলাকায় কল না-থাকায় নিত্য প্রয়োজনের জলেও টান পড়ছে। আগামী গ্রীষ্মে জল সঙ্কট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা দাবি করছেন আরও জলের কলের জন্য। কিন্তু হেলদোল নেই প্রশাসনের। ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

Advertisement

এক সময়ে সবং থানাকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠেছিল সবংয়ে। কিন্তু যোগাযোগের অসুবিধার জন্য সবংয়ের সেই জনপ্রিয়তা আর নেই। বরং সাত কিলোমিটার উত্তরে দেভোগ পঞ্চায়েতের লুটুনিয়া মৌজার তেমাথানি নতুন শহর হয়ে উঠেছে গত কয়েক বছরে। জাতীয় সড়কের ডেবরা-সবং রাস্তা এখানেই তিনভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি গিয়েছে দেহাটি হয়ে পটাশপুর, অন্যটি নারায়ণগড় এবং মূল রাস্তাটি চলে গিয়েছে সবংয়ে। এখানেই রয়েছে সবংয়ের সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়। এমন তিনমাথার মোড়ে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই এই এলাকার গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে।

সবং ব্লকের সবং ও লুটুনিয়ায় রাস্তায় পানীয় জলের কল গড়ে তুলেছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পরে ভিকনি নিশ্চিন্তপুর, চাঁদকুড়ি, বড়সাহারা, আদাসিমলা-সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বিস্তীর্ণ এলাকায় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু লুটুনিয়া জলপ্রকল্পের উপর চাপ বাড়িয়েছে তেমাথানির জনসংখ্যা। এই প্রকল্পে তিনটি পাম্প থেকে যে জল পাওয়া যায়, তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ। এমনকী পর্যাপ্ত কলও নেই। স্থানীয় বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক অরিজিৎ দাসঅধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘অধিকাংশ কলেই জল পড়ে না। নতুন করে যে সমস্ত এলাকায় বসতি বাড়ছে সেখানে পানীয় জলের কলই তো নেই। দশ বছর আগে বাড়ি করেছি। এই এলাকার উপর দিয়ে পাইপলাইন গিয়েছে কিন্তু কল নেই। গরমে জলসঙ্কট প্রতি বছরের সঙ্গী।’’

বাসিন্দাদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে প্রকল্প গড়ে বাড়ি বাড়ি জল সংযোগ দিতে হবে। সে যেখানে টাইম কলে যেখানে জল পড়েনা সেই এলাকায় রাস্তার কল বাড়ানোর দাবি তুলছে তাঁরা। লুটুনিয়া উত্তরের আনসুরা বিবি বলেন, ‘‘বাড়ির কাছেই একটি পানীয় জলের কল ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আর সেই কল দিয়ে আর জল পড়ছে না। শুনেছি রাস্তা হওয়ার সময় সংযোগ কেটে গিয়েছে।’’ সেই সংযোগ আর মেলেনি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডা বলেন ‘‘জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে আবেদন করেছি কলের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। বাড়ি জল সংযোগের প্রস্তাব রয়েছে।” তবে সবং ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক দীপক দাস বলেন, ‘‘বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার নিয়মর নেই। তবে নতুন করে তেমাথানি এলাকায় ১০টি কল বসানো হচ্ছে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আবেদন পেলে আমরা নতুন কল বসানোর বিষয়ে ভাবব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement