তালা ভেঙে রাতভর লুটপাট হল প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে একটি তিনতলা বড়িতে রাতভর লুটপাট চালাল সশস্ত্র ডাকাতদল। যে বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে, সেটি হলদিয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর জয়ন্তী রায় দণ্ডপাটের। শুক্রবার রাতে একাধিক গেট ভেঙে বাড়িতে ঢোকে ডাকাতেরা। তার পর নগদ টাকা-সহ সোনার গহনা, মোবাইল থেকে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস লুট করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দুর্গাচক থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ হলদিয়ার দুর্গাচকে প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে আট থেকে ১০ জনের একটি ডাকাতদল ঢোকে। বাড়ির একতলায় ভাড়াটে থাকেন। প্রথমে সেখানে হানা দেয় ডাকাতেরা। তার পর সিঁড়ির তিনটি গেট ভেঙে সোজা তিনতলায় উঠে যায়। কাউন্সিলারের স্বামীকে ঘুম থেকে উঠিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে সমস্ত ঘরের দরজা খোলানো হয়। তার পর শুরু হয় লুটপাট। ভোর প্রায় ৪টে নাগাদ ডাকাতেরা এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়।
শনিবার সকাল হতেই ঘটনার দুর্গাচক থানায় খবর দেয় কাউন্সিলরের পরিবার। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীরা প্রথমে আমার স্বামীর ঘরে ঢুকে তাঁকে পাকড়াও করে আনে। তার পর আমাকে ঘরের দরজা খুলতে বলে। আমি ভয় পেয়ে দরজা খুলতেই ওরা টাকা এবং গহনা চায়। ওদের জানাই বাড়িতে তেমন কিছুই নাই। কিন্তু ওরা গোটা ঘর তছনছ করতে শুরু করে দেয়। আমার কাছে সামান্য কিছু গয়না ছিল। সেগুলো আলমারি-সহ অন্য জায়গা থেকে বার করে আনে ওরা।’’ তাঁর অভিযোগ, “সব মিলিয়ে বাড়িতে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা-সহ প্রায় ১৫ ভরি সোনার গহনা লুট করে পালিয়েছে।”
প্রাক্তন কাউন্সিলর জানান, এক জনের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। বাড়ির একতলায় কয়েক জন ডাকাত ছিল। তাদের হাতে ছিল পিস্তল। কাউন্সিলরের স্বামী বিকাশরঞ্জন রায় বলেন, “রাত আড়াইটে নাগাদ কয়েক জনের ডাকাডাকিতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ভয়ে-আতঙ্কে অসুস্থ বোধ করছিলাম। ডাকাতেরাই আমাকে জল এনে খেতে দেয়। তার পর টাকাপয়সা দিতে বলে। কিন্তু বাড়িতে প্রায় কিছুই নেই জানানোয় এক জন জানায়, ওরা সব খবর নিয়েই এসেছে। আমাকে ভয় দেখিয়ে স্ত্রীর ঘরের দরজা খুলতে বলে। কোনও রকম প্রতিরোধ ছাড়া ভোর ৪টে পর্যন্ত গোটা বাড়িতে লুটপাট চালায়। শেষ আমাদের ঘরের ভিতরে পাখার তলায় বসিয়ে দিয়ে চলে যায়। আর যাওয়ার সময় সবার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’’ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতারির খবর পাওয়া যায়নি।