—ফাইল চিত্র।
উপলক্ষ ছিল স্মরণসভা। উদ্দেশ্য ছিল শক্তিপ্রদর্শন। তবে আপাতত দাঁড়ি পড়ল দুয়েই।
আগামী ২৩ নভেম্বর বিধানসভার প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদার স্মরণসভা হওয়ার কথা ছিল। ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের সেই স্মরণসভায় মাঠ ভরাতে হবে কানায়-কানায়! কমপক্ষে বিশ হাজার লোক আনতে হবে। শাসক দল সূত্রের খবর, সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলা নেতৃত্বকে এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। এমন গুরুদায়িত্ব পালনের আয়োজন করতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছিল জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর। সদ্য করোনামুক্ত হয়ে দলীয় কাজকর্ম শুরু করেছেন দুলাল। দলীয় সূত্রের খবর, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়ে ঘন ঘন ব্লক সভাপতিদের ফোন করেন দুলাল। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের একাধিক ব্লক সভাপতি জানিয়ে দেন, বাঁদনা পরবের গরু খুটান চলছে। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামে গরু খুঁটান হবে। ধান কাটার মরসুমও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেশি লোক করার মতো পরিস্থিতি নেই। তাছাড়া একাধিক ব্লক সভাপতি দুলালকে জানান, বেশি সংখ্যক গাড়ি ভাড়া করার মতো হাতে টাকা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ২৩ নভেম্বর সুকুমারের স্মরণসভা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। কবে স্মরণসভা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি।
প্রস্ততির অভাবের কথা মানতে নারাজ দুলাল। তিনি বলছেন, ‘‘স্মরণসভায় কুড়ি হাজার জমায়েত করার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। এ জন্য ব্লকে-ব্লকে প্রস্তুতি সভাও হয়ে গিয়েছে। তবে মহাসচিবের অন্য জরুরি কর্মসূচি থাকায় তিনি ২৩ তারিখে আসতে পারবেন না। সেজন্য ২৩ তারিখ সভা হবে না। মহাসচিব যেদিন সময় দেবেন, সেদিনই সভা হবে।’’
গত ২৯ অক্টোবর কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ক্যানসারে আক্রান্ত সুকুমারের মৃত্যু হয়। পরদিন ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের জারালাটায় সুকুমারের অন্ত্যেষ্টিতে বাধা দেন স্থানীয়দের একাংশ। জটিলতা কাটিয়ে পরে ডেপুটি স্পিকারের শেষকৃত্য হয়। এরপর ঝাড়গ্রামের প্রয়াত বিধায়ক সুকুমারের স্মরণসভা করার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন তৃণমূলের মহাসচিব। সেই মতো গত ১৭ নভেম্বর তৃণমূলের জেলা কমিটির বর্ধিত বৈঠক ডাকা হয়। যদিও ওই বৈঠকে জেলা কমিটির ৯৮ জন সদস্যের মধ্যে অর্ধেক সদস্য গরহাজির ছিলেন। ওই বৈঠকে প্রথমে ঠিক হয় ২১ নভেম্বর ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে স্মরণসভা হবে। পরে জানানো হয়, অন্য কর্মসূচি থাকায় মহাসচিব ওই দিন আসতে পারবেন না। তাই সভার দিন পরিবর্তন করে ২৩ নভেম্বর করা হয়।
বাঁদনা পরব, ধান কাটা, অর্থসঙ্কট—ব্লক নেতৃত্বদের কাছ থেকে এই তিন ধরনের সমস্যার কথা পৌঁছয় জেলা নেতৃত্বের কাছে। শুক্রবার জেলার ৮টি ব্লকের নেতৃত্ব ও দলীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা সভাপতি দুলাল। জেলা তৃণমূলের দুই কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল দত্ত ও অজিত মাহাতোও ওই বৈঠকে ছিলেন। সেই বৈঠকেই স্মরণসভা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সুকুমার স্মরণে শক্তি প্রদর্শন। দু’দফায় পিছিয়ে গেল পরিকল্পনা।