হাতির তাণ্ডবে বাড়ছে ধান-সব্জি চাষে ক্ষতির বহর

দাঁতালের তাণ্ডবে বাড়ছে ফসলের ক্ষতি। দিন কয়েক ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় ও গড়বেতার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে হাতির দল। সন্ধে নামলেই জঙ্গলে থেকে বেরিয়ে হাতির পাল ফসল নষ্ট করছে। ভোর হলেই ফের সেঁদিয়ে যাচ্ছে জঙ্গলের গভীরে। ঘটনায় উদ্বেগে বন দফতরের আধিকারিকরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

দাঁতালের তাণ্ডবে বাড়ছে ফসলের ক্ষতি। দিন কয়েক ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় ও গড়বেতার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে হাতির দল। সন্ধে নামলেই জঙ্গলে থেকে বেরিয়ে হাতির পাল ফসল নষ্ট করছে। ভোর হলেই ফের সেঁদিয়ে যাচ্ছে জঙ্গলের গভীরে। ঘটনায় উদ্বেগে বন দফতরের আধিকারিকরাও।

Advertisement

ফসলের ক্ষতির কথা স্বীকার করছেন বন দফতরের রূপনারায়ণ ও মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা ও অর্ণব সেনগুপ্ত। তাঁরা বলেন, “গভীর জঙ্গলে হাতির পালকে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু জঙ্গলে খাবার না থাকায় হাতি ফের লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ফসলের ক্ষতি করে স্থানীয় জঙ্গলেই হাতিগুলি ঘোরাফেরা করছে। হাতিগুলিকে দলমায় পাঠানোর জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

বন দফতর সূত্রে খবর, গত অগস্টে দলমা থেকে একটি হাতির পাল জেলায় ঢুকে। দলে প্রায় একশোটির মতো হাতি ছিল। দলটি এখন তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে ছ’টি এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার পর্যন্ত বন দফতরের দুই বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সব এলাকা থেকে এখনও তথ্য পাওয়া যায়নি। ক্ষতির বহর আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে খবর, খাবারের অভাবেই ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে হাতির দল জেলায় ঢোকে। হাতির পালটি গত কয়েকদিন ধরেই গোয়ালতোড় ও গড়বেতার আমকোপা, ভেদুয়া, লেদাখামার, মাগুরাশোল, নরহরিপুর, আগরা‌, ধামচা, ওখলা, নোহারী, গাঙদুয়ারি, কেশিয়া-সহ বিভিন্ন গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। দাঁতালের তাণ্ডবে সব্জি, ভুট্টা, ধানের ক্ষতি বাড়ছে। গত কয়েকদিনে মেদিনীপুর ও রূপনারাণ রেঞ্জ মিলিয়ে প্রায় এক কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

গোয়ালতোড়ের কেশিয়া গ্রামের চাষি হারাধন পাখর বলেন, “এখন আমন ধান ও বিভিন্ন সব্জি চাষ হচ্ছে। হাতির পাল একবার মাঠে নামলে জমির সব ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে চলতে থাকলে হাজার হাজার পরিবার না খেতে পেয়ে মরবে। বন দফতর সব কিছু জেনেও উদাসীন।” একইভাবে, গড়বেতার আমলাগোড়ার অমিয় কোলের কথায়, “এক বিঘা জমিতে শশা চাষ করেছিলাম। চাষ করতেই ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন শশার দামও ভাল। কিন্তু হাতি সব শেষ করে দিয়েছে।”

রূপনারায়ণ ও মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথবাবু ও অর্ণববাবু বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করেছি। ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে।’’ তাঁরা আরও বলেন, ‘‘আমরা ক্ষতিপূরণ দিলেও ফসল তুলে চাষিরা যে লাভ পেতেন- সেই টাকা তো দেওয়া হচ্ছে না। তাই এখনই হাতির তাণ্ডব থামানো না গেলে চাষিদের ক্ষতি বাড়বে। আমরা সতর্ক রয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement