তাইল্যান্ডে কাজে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু যুবকের। — নিজস্ব চিত্র।
পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে দিন কয়েক আগে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে তাইল্যান্ডের একটি হোটেলে কাজ করতে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থানার বারাঙা গ্রামের বাসিন্দা ২৯ বছরের শেখ শাহেদ। ২১ দিন পর পরিবার খবর পায়, ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ভিন্দেশে মৃত ছেলের দেহ ফিরিয়ে আনতে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন এজেন্ট।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২৮ মার্চ পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখানেই শাহেদের মৃত্যু হয়েছে বলে গ্রামে খবর এসেছে। এ ভাবে আচমকা রোজগেরে ছেলের মৃত্যুতে গোটা পরিবার অথৈ জলে। এর পর দেহ ফিরিয়ে আনতে শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। স্থানীয় এজেন্ট দেহ ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু টাকা দাবি করেন। সেই মতো গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে ১০ হাজার টাকা এজেন্টের হাতে তুলে দেন। কিন্তু এজেন্ট তাইল্যান্ডে গিয়ে দেহ ফিরিয়ে আনার জন্য আরও ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
এত টাকা দিতে অপারগ পরিবার। তাই এখনও পর্যন্ত দেহ তাইল্যান্ডেই পড়ে রয়েছে বলে দাবি শাহেদের পরিবারের। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আব্বাস বলেন, “হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে শাহেদ পরিবারের জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র এক মাসের মধ্যেই সব স্বপ্ন শেষ! এজেন্ট এত বিপুল টাকা দাবি করছেন, যে জন্য দেহ ফেরাতে পারছি না আমরা। স্থানীয় প্রশাসনের দরজায় গিয়েও আমরা হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি।’’
শাহেদের স্ত্রী রুকসানা বিবি বলেন, “বিদেশে যাওয়ার জন্য ঋণ নিয়ে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। শাহেদ বলেছিল, তাইল্যান্ডে কাজে গিয়ে সব ম্যানেজ করে নেবে। আমার সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হত। শেষ বার ফোনে কথা বলার মাঝে জানিয়েছিল, এখন রাখছি, কাজ এসেছে, পরে কথা হবে। কিন্তু তার পর আর ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি।’’
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘‘ওই পরিবার থেকে জেলা প্রশাসনে কোনও আবেদন করা হয়নি। বিষয়টি তাই নজরে ছিল না। তবে পরিবার থেকে যোগাযোগ করা হলে নবান্নের মাধ্যমে দিল্লির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে আবেদন জানাতে হবে। এর পরেই দেহ ফেরানো সম্ভব।’’