মন্দা বাজারে দোসর বৃষ্টি, ঘনাল আঁধার

সোনা মহার্ঘ। লোকের হাতেও টাকা নেই। ধনতেরাসের বাজারে আনন্দবাজারসোনা মহার্ঘ। লোকের হাতেও টাকা নেই। ধনতেরাসের বাজারে আনন্দবাজার

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৭
Share:

নেই ক্রেতার ভিড়। শুক্রবার তমলুক শহরের একটি সোনার দোকান।

ধনতেরাসের দিন ক্রেতাদের গয়নার চাহিদা মেটাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তমলুক শহরের পুরনো পঞ্জাব ব্যাঙ্কের মোড়ের এক নামী স্বর্ণব্যবসায়ী। সোনার শাঁখা পলা, কঙ্কন, লহরী থেকে হিরের গয়নার সম্ভার সাজিয়েছিলেন ক্রেতাদের অপেক্ষায়। একে বাজার এমনতিই মন্দা। তার উপর এমন দিনে নিম্নচাপের বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় ধনতেরাসের বাজার নিয়ে রীতিমত চিন্তায় পড়েছেন সোনার দোকানিরা।

Advertisement

তবে ধনতেরাসের আচার মেনে কিছু ক্রেতা সোনার দোকানগুলিতে ভিড় করলেও তা মোটচও আশানুরূপ নয় বলে বিভিন্ন সোনার দোকানের মালিকেরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বৃষ্টি না হলে হয়তো কিছু মানুষ দোকানে আসতেন। কিন্তু গত কাল থেকে আবহাওয়ার অবস্থা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিল। ধরতেরাসের বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন দোকানের তরফে গয়না কিনলে নানারকম ‘অফার’ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিক্রিবাটা তেমন না জমায় রবিবার পর্যন্ত ক্রেতাদের জন্য ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানালেন অনেক দোকানের মালিক।

তমলুক শহরে প্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০টির মতো সোনার দোকান রয়েছে। এছাড়া শহরের বর্গভীমা মন্দির, হাসপাতাল মোড় এলাকা মিলিয়ে কলকাতার নামী ব্র্যান্ডের তিন তিনটে সোনার দোকান রয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অধিকাংশের অভিযোগ, নোটবন্দির ধাক্কা সামলে নিয়ে সোনার গয়না কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ যখন বাড়ছে, সেই সময়েই সোনার দাম চড়চড়িয়ে বেড়ে সেই চাহিদায় ভাটা পড়েছে। বর্গভীমা মন্দির এলাকার এক নামী স্বর্ণবিপণির কর্ণধার নারায়ণ মান্না বলেন, ‘‘ধনতেরাসে সোনা ও হিরের গয়নার মজুত করে আমরা ছাড়ের ব্যবস্থা করেছি। সোনার গয়নায় মজুরিতে ২৫ শতাংশ ছাড়, হিরের গয়নায় কর ছাড় দেওয়া এবং ৭৫ হাজারের বেশি টাকার কেনাকাটায় উপহারের ব্যবস্থা রয়েছে। অনেকে ফোনে যোগযোগ করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির জন্য অনেকে আসতে পারেনি। ফলে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম কেনাকাটা হয়েছে।’’ শহরের পদুমবসান এলাকার গৃহবধূ সুস্মিতা মাইতি বলেন, ‘‘ধনতেরাস উপলক্ষে প্রতি বছরই কিছু না কিছু গয়না কিনি। এ বার সোনার দাম অনেকটাই বেশি। তাই হাল্কা ওজনের আংটি কিনব ভেবেছিলাম। কিন্তু আকাশের যা অবস্থা তাতে আর গয়নার দোকানে যাওয়া হয়নি।’’

Advertisement

নোনাকুড়ি বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত বাঙাল এদিন বলেন, ‘‘শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের ধনতেরাসে গয়না কেনার আগ্রহ কম থাকে মূলত আর্থিক কারণে। তা সত্ত্বেও গত বছর ধনতেরাসের দিন ক্রেতাদের দেখা মিললেও এ বার সকাল থেকে দোকান খোলার পর দুপুর পর্যন্ত একজনও ক্রেতা আসেনি।’’

প্রায় একই সুর কাঁথির রামনগর বাজারের স্বর্ণব্যবসায়ী পুষ্পেন্দু কামিল্যার। তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরেই সোনার দাম চড়া থাকায় বাজার মন্দা। এ বার ধনতেরাস উপলক্ষে গয়নার মজুরিতে ১৫ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছিলাম। তাতেও ভাল সাড়া মেলেনি। ছাড় বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছি।’’

কাঁথিতে কয়েক বছর ধরে সোনার গয়না বিক্রির ব্যবসা করছে সেনকো গোল্ড। কলকাতার এই নামী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ১৬ অক্টোবর থেকে তাদের বিপণন কেন্দ্রে ধনতেরাস উপলক্ষে গয়না কেনাকাটা শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। মজুরিতে ছাড়ের সুবিধা না থাকলেও ১০ হাজার টাকার কেনাকাটার উপর উপহার রয়েছে। হিরের গয়নার ক্ষেত্রেও তাই। বিক্রিবাটা মোটামুটি চললেও বৃষ্টির কারণে গত তিন দিন ধরে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement