তৃণমূলের জমানায় গ্রামে গ্রামে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে ভূরি ভূরি দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে বলে তাদের অভিযোগ বিস্তর। কিন্তু রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে ওই প্রকল্পের মজুরির টাকা সরাসরি নিচু তলায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগের বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেই দাঁড়াচ্ছে সিপিএমের কৃষক সভা। সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের অধিকারকে খাটো করছে। আর যাঁদের জন্য মজুরি, সেই উপভোক্তাদের হাতে ঠিকমতো টাকা পৌঁছনোর কোনও নিশ্চয়তাও এতে মিলছে না।
নরেন্দ্র মোদীর আমলে কৃষকদের কেমন দুর্দশা হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরে এবং ১৪ দফা দাবি নিয়ে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে কৃষক সভার দেশজোড়া জাঠা কর্মসূচি। পশ্চিমবঙ্গে জাঠার দাবিদাওয়ার মধ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনার কথাও বলছে তারা। এই সূত্রেই এ দিন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি নৃপেন চৌধুরী ও রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার জানিয়েছেন, রাজ্যকে এড়িয়ে টাকা দেওয়ার উদ্যোগ তাঁরা সমর্থন করছেন না। নৃপেনবাবুদের বক্তব্য, ‘‘প্রকৃত উপভোক্তারা যাতে উপকৃত হন, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে। বিডিও বা পঞ্চায়েত প্রধানের অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে লাভ কী? কারণ নানা জায়গাতেই খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, কাজ করানোর মাস্টার রোলেই গোলমাল আছে। ভুয়ো নাম দেওয়া আছে।’’ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য সাংগঠনিক স্তরে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিশদ তথ্য সংগ্রহে নেমেছে কৃষক সভা।
‘পুকুরচুরি’র দায়ে রাজ্যকে বিঁধলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতে ছাড়েননি অমলবাবুরা। তাঁদের যুক্তি, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার নজরদারি করতেই পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় এ ভাবে রাজ্যকে এড়িয়ে সরাসরি টাকা দেওয়া মানা যায় না।’’ একই সুরে কেন্দ্রের এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিরোধী দলের কৃষক সংগঠন এই প্রশ্নে সহমত হয়েও অবশ্য মোদী-দিদির নীতির যুগ্ম প্রতিবাদেই পথে নামছে।
জাঠার অঙ্গ হিসাবে আগামী ৮ নভেম্বর ধর্মতলায় জমায়েত করবে কৃষক সভা। জাঠার পথে জেলায় জেলায় ১৯টি বড় এবং অসংখ্য ছোট জমায়েতও হবে। জাঠা শেষে সংসদ চলাকালীন দিল্লিতে সমাবেশ ২৪ নভেম্বর। জাঠার পথে সংগঠনকে চাঙ্গা করাই সিপিএমের উদ্দেশ্য।