রাস্তা নিয়ে বিপাকে জেলা পরিষদ। প্রতীকী ছবি।
মানচিত্রে রাস্তার হদিস নেই! তাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ দশটি রাস্তা দেখভালের দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও বিপাকে জেলা পরিষদ। কারণ, পূর্ত দফতর ওই দশ রাস্তার যাবতীয় তথ্য চেয়েছে জেলা পরিষদের কাছে।
জেলার এই রাস্তাগুলি দেখভালের দায়িত্ব জেলা পরিষদ পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দিতে চায়। পূর্ত দফতর ওই সব রাস্তার বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে। মানচিত্রও চেয়েছে। আর এখানেই বিপাকে পড়েছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি মানছেন, “মানচিত্রের একটা সমস্যা রয়েছে। সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
যে দশটি রাস্তা পূর্ত দফতরকে দিতে চায় জেলা পরিষদ তার মধ্যে মকরামপুর থেকে তেমাথানি, হেমাতপুর থেকে তাতারপুর অন্যতম। প্রথম রাস্তাটি ২২ কিলোমিটারের। নারায়ণগড় এবং সবং ব্লকের উপর দিয়ে গিয়েছে। পরের রাস্তাটি ১১ কিলোমিটারের। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের উপর দিয়ে গিয়েছে। চারটি রাস্তা নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার বৈঠকে বসেছিলেন জেলা পরিষদের কর্তারা। এরমধ্যে ওই দু’টি রাস্তাও ছিল। বৈঠকেই ওই মানচিত্রের সমস্যার কথা উঠে আসে। দেখা যায়, জমির মানচিত্রে পুরো রাস্তার অবস্থান নেই। কোথাও রাস্তা রয়েছে, কোথাও নেই! বদলে শুধু জমির উল্লেখ রয়েছে। সমস্যার সমাধানে রেকর্ড খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা পরিষদের এক কর্তা মানছেন, “দশটি রাস্তার মধ্যে চারটি রাস্তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাকি ছ’টি রাস্তা নিয়েও বৈঠক হবে।”
আর কোন কোন রাস্তা পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দিতে চাইছে জেলা পরিষদ? তালিকায় রয়েছে কিশোরগেড়িয়া ঝাঁকরা থেকে কালিকাপুর, হুমগড় থেকে আমলাশুলি, খাকুড়দা থেকে মোহনপুর, দাঁতন থেকে জাহালদা, রাধানগর থেকে কুঠিঘাট, ধাদিকা থেকে কল্যাণচক, পিঁড়াকাটা থেকে গোয়ালতোড়, মকরামপুর থেকে তেমাথানি, মুগবসান আমনপুর থেকে খেতুয়া এবং হেমাতপুর থেকে তাতারপুর।
বস্তুত, এই দশটি রাস্তা হস্তান্তর করতে চেয়ে গত বছর পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে চিঠিও দিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। উত্তরাদেবী বলছিলেন, “জেলার দশটি রাস্তা দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরকে দেওয়া হবে। সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।” কেন এই রাস্তাগুলোর দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরকে দিতে চাইছে জেলা পরিষদ? জেলা পরিষদের এক কর্তার কথায়, “পূর্ত দফতরের হাতে থাকলে রাস্তাগুলোর নিয়মিত দেখভাল হবে। মেরামতের প্রয়োজন হলে দ্রুত তা করা সম্ভব হবে। জেলা পরিষদ সব সময় রাস্তা মেরামতে দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করতে পারে না। সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকে জেলা পরিষদকে কাজ করতে হয়।” জেলা পরিষদের আর্জিতে সায় রয়েছে পূর্ত দফতরের। কেমন? সভাধিপতি চিঠি দেওয়ার পরই পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (প্ল্যানিং) এক চিঠি পাঠান। রাস্তাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য চান। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে কিছু তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্ত দফতর আরও কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে। শৈবালবাবুর আশ্বাস, “যা যা জানতে চাওয়া হয়েছে, সবই জানিয়ে দেওয়া হবে।”