মেদিনীপুর শহরের প্রগতিপল্লির এই মদের দোকানেই আপত্তি স্থানীয়দের (বাঁ দিকে)। এলাকায় আন্দোলনের বার্তা (ডান দিকে)। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
এলাকাবাসীর আন্দোলনের জেরে মদের দোকান সিল করে দিল আবগারি দফতর। শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর শহরের ওই দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। আবগারি দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সুপার সুব্রত দাশগুপ্ত বলেন, “মেদিনীপুরের ওই দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।” আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কাতেই কি এই পদক্ষেপ? সুব্রতবাবুর জবাব, “সব দিক খতিয়ে দেখেই দোকানটি সিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
মেদিনীপুর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রগতিপল্লিতে রয়েছে এই মদের দোকানটি। হাইকোর্টের নির্দেশে গত ২৬ অক্টোবর স্থানীয়দের বাধা সত্ত্বেও পুলিশি পাহারায় দোকান খোলা হয়েছিল। স্থানীয়দের অবশ্য অভিযোগ, মদ্যপদের উপদ্রবে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। গালিগালাজ, খালি মদের বোতল ভেঙে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। পাশেই আবার রয়েছে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। তাই মদের দোকানটি অন্যত্র সরানোর দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। এই দাবিতে ৪ ডিসেম্বর থেকে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর কল্পনা মূখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন এলাকাবাসী।। তারপরই শুক্রবার রাতে দোকানটি সিল কর দেয় আবগারি দফতর।
স্থানীয় বাসিন্দা চৈতালি বিবি, রিঙ্কু নাগরা অবশ্য বলছেন, ‘‘দোকান সিল করলেই হবে না। অন্যত্র সরাতে হবে। তা না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’ কাউন্সিলর কল্পনাদেবীও বলেন, ‘‘সামনেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। তা ছাড়া লোকালয়ের মধ্যে মদের দোকান না থাকা উচিত। দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিলেই ভাল হয়।’’ দোকানের মালিক ব্রতীন সাহা জানান, শুক্রবার রাতে আবগারি দফতরের আধিকারিক দোকানে এসেছিলেন। তারপর দোকান থেকে মদ বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। ব্রতীনবাবু বলেন, ‘‘আমি আইনের দারস্থ হব।’’
আবগারি দফতরের এক সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের এই বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। পুলিশও দোকানটি ওই এলাকায় না রাখার পক্ষপাতী। আবগারি দফতরের এক কর্তা মানছেন, “এলাকার মানুষ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। যে কোনও সময় অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে পারত। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে একটা পদক্ষেপ করতেই হত।” তাঁর কথায়, “দোকানটি মেদিনীপুরের ওই এলাকায় রাখা যাবে না। তবে মালিক চাইলে দোকান অন্যত্র স্থানান্তর করতে পারেন। তাতে কোনও আপত্তি নেই।”